Nabadhara
ঢাকাশুক্রবার , ৩ অক্টোবর ২০২৫
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ইতিহাস
  5. কৃষি
  6. খুলনা বিভাগ
  7. খেলাধুলা
  8. চট্টগ্রাম বিভাগ
  9. জাতীয়
  10. জেলার সংবাদ
  11. ঢাকা বিভাগ
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. ধর্ম
  14. প্রধান সংবাদ
  15. ফিচার
আজকের সর্বশেষ সবখবর

তেরখাদায় আনন্দঘন পরিবেশে সম্পন্ন হলো শারদীয় দুর্গোৎসব

রাসেল আহমেদ,খুলনা প্রতিনিধি
অক্টোবর ৩, ২০২৫ ১১:৫১ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

রাসেল আহমেদ,খুলনা প্রতিনিধি

শারদীয় দুর্গোৎসবের ঢাকের বাদ্যি আর উলুধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছিল তেরখাদা উপজেলার প্রতিটি পূজামণ্ডপ। আলো, আনন্দ আর ধর্মীয় ভক্তিতে ভরপুর এই উৎসব সম্পন্ন হয়েছে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ও সুরক্ষিত পরিবেশে।

উপজেলা জুড়ে ছয়টি ইউনিয়নের ৯৮টি পূজামণ্ডপে এবার অনুষ্ঠিত হয়েছে দুর্গাপূজা, যেখানে মণ্ডপভিত্তিক আয়োজনে ছিল ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা, আলোকসজ্জা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার চমৎকার সমন্বয়।

তবে এবারের উৎসবের সবচেয়ে বড় অর্জন ছিল মানুষের মনে ভর করা নিরাপত্তাবোধ। কোনো রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই, শুধুমাত্র সরকারের সহযোগিতা ও প্রশাসনের সর্বোচ্চ তৎপরতায় দুর্গোৎসবটি নির্বিঘ্নে উদযাপিত হয়েছে। এই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। মণ্ডপগুলোতে ছিল টহল, পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য এবং স্বেচ্ছাসেবকদের উপস্থিতি।

উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শংকর কুমার বালা জানান, “প্রতিবছর পূজার সময় কিছুটা হলেও সংশয় থেকে যেত—নিরাপত্তা, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, নানা রকম চাপের আশঙ্কা। কিন্তু এবার ছিল না কোনো ধরনের দ্বিধা। প্রশাসন যেভাবে পাশে ছিল, তা নজিরবিহীন। আমরা নির্ভয়ে, নিশ্চিন্তে এবং শতভাগ উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গোৎসব উদযাপন করতে পেরেছি।” তিনি সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

উৎসবকে ঘিরে সুরক্ষা ব্যবস্থা ছিল অত্যন্ত কড়া ও সুশৃঙ্খল। প্রতিটি পূজামণ্ডপে সার্বক্ষণিক নজরদারি ছিল নৌ বাহিনী, পুলিশ, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবকদের। তেরখাদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, “আমাদের নিরাপত্তা টিম দিন-রাত মাঠে ছিল। কোথাও যেন কোনো বিশৃঙ্খলা না ঘটে, সে জন্য আমরা আগে থেকেই পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করেছি। প্রতিটি মণ্ডপে মোতায়েন ছিল পর্যাপ্ত ফোর্স, এবং নিয়মিত টহল চলেছে। এর ফলেই মানুষ নির্ভয়ে পূজা পালন করতে পেরেছে।”

উৎসবে আগত দর্শনার্থীরাও ছিলেন আনন্দে আপ্লুত। স্থানীয় বাসিন্দা অনন্যা সরকার বলেন, “প্রতি বছরই পূজায় আসি, কিন্তু এবারের মতো এত স্বস্তিদায়ক পরিবেশ আগে কখনো দেখিনি। নিরাপত্তা, ব্যবস্থাপনা—সব কিছু এত গোছানো ছিল যে মনে হয়েছে নিজের ঘরেই পূজা করছি।”

প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবধরনের প্রস্তুতি ছিল সুনির্দিষ্ট ও ফলপ্রসূ। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জান্নাতুল আফরোজ স্বর্ণা জানান, “সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা প্রতিটি পূজামণ্ডপে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। নৌ বাহিনী, পুলিশ, আনসার, ও স্বেচ্ছাসেবক টিম সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করেছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব শেষ হওয়াটাই আমাদের সবচেয়ে বড় সাফল্য।”

রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বা বিতর্কের ছায়া ছাড়াই যে ধর্মীয় উৎসব পালন করা যায়, এবারের দুর্গোৎসব যেন তারই এক বাস্তব উদাহরণ। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, সহনশীলতা ও সৌহার্দ্যের এক উজ্জ্বল চিত্র উঠে এসেছে পুরো উৎসবজুড়ে। পূজার আয়োজনের শুরু থেকে বিসর্জন পর্যন্ত সার্বিকভাবে যে শৃঙ্খলা ও সহযোগিতা দেখা গেছে, তা স্থানীয়ভাবে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

শারদীয় দুর্গোৎসব শেষ হলেও রেখে গেছে এক স্বস্তির আবহ, এক ইতিবাচক বার্তা—উৎসব হতে পারে নির্ভয়ে, নির্বিঘ্নে এবং সবার সহযোগিতায় সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ এক সামাজিক মিলনমেলা। সরকারের সহযোগিতা, প্রশাসনের দক্ষ পরিচালনা এবং সাধারণ মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এবারের দুর্গোৎসব হয়ে উঠেছে একটি সফল, শান্তিপূর্ণ ও আনন্দঘন আয়োজন, যা বহুদিন স্মরণে থাকবে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।