সুব্রত সরকার, মহম্মদপুর (মাগুরা)
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের রাজপাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষক মোঃ হেদায়েতুল্লাহ তালুকদার ফৌজদারি মামলার আসামি হয়েও দীর্ঘ চার মাস ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। তবুও প্রধান শিক্ষকের সহযোগিতায় তিনি গোপনে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে নিয়মিত বেতন তুলছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ও বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একটি গ্রাম্য সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ আসামি হেদায়েতুল্লাহ তালুকদার। মামলার পর থেকে তিনি বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকলেও, প্রধান শিক্ষক তুষার কান্তির সহায়তায় মাসের শেষ দিকে গোপনে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে যাচ্ছেন এবং নিয়মিত বেতন উত্তোলন করছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষক বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। তবে হাজিরা খাতায় তার স্বাক্ষর রয়েছে। শিক্ষার্থীরা জানান, “হেদায়েত স্যার চার মাস ধরে বিদ্যালয়ে আসেন না। তার অনুপস্থিতিতে পড়াশোনায় সমস্যা হচ্ছে।”
বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক অনিমেষ কুমার দাস বলেন, “মামলার পর শিক্ষক হেদায়েত কিছুদিন গোপনে বিদ্যালয়ে এসেছেন, কিন্তু কোনো ক্লাস নেননি।”
অন্য একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক মাঝে মাঝে খাতা হেদায়েত স্যারের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন বা গোপনে ডেকে এনে স্বাক্ষর করান। তারা আরও বলেন, একজন প্রধান শিক্ষক হয়ে তিনি কীভাবে এ কাজ করেন, সেটি জানা নেই।
অভিযুক্ত শিক্ষকের বক্তব্য পাওয়া যায়নি, তিনি পলাতক রয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
প্রধান শিক্ষক তুষার কান্তি বলেন, “তিনি মাঝে মাঝে এসে হাজিরা দেন। অসুস্থতার কথা বলে ছুটির আবেদন করেছেন। মামলার কারণে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। আমি বিবেচনায় সুযোগ দিয়েছি।” ছুটি দেওয়ার সময়সীমা নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “যতদিন ইচ্ছা ছুটি নিতে পারে, আমি দিতেও পারি।”
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী শফিউল আলম (অঃ দাঃ) বলেন, “অভিযোগ প্রমাণিত হলে এটি নিয়মবহির্ভূত। তদন্তপূর্বক উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হবে।”
জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন, “শিক্ষক অনুপস্থিত থেকেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে থাকলে, সেটি গুরুতর অনিয়ম। তদন্ত সাপেক্ষে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”