নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার আচারগাঁও ইউনিয়নের সিংদই গ্রামে ব্যক্তি মালিকানা ও খাস জমি জোরপূর্বক দখল করে মাছ চাষের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। এতে চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে এলাকাবাসীর মাঝে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে তারা পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত এবং নিজের নামে রেজিস্ট্রিকৃত জমি ভোগদখল করে আসছেন, যা স্থানীয়ভাবে “ধূলিয়া বিল” নামে পরিচিত। কিন্তু চলতি বছরের ২০ জুলাই থেকে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবুল ফকির তার লোকজনসহ জোরপূর্বক উক্ত জমি দখল করে মাছের পোনা চাষ শুরু করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগী জানান, বাবুল ফকির প্রভাবশালী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ প্রকাশ্যে কথা বলার সাহস পাচ্ছেন না। প্রতিবাদ করলেই হুমকি-ধমকির মুখে পড়তে হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তারা। এর ফলে সাধারণ মানুষ এখন বিলের অধিকাংশ অংশে প্রবেশ করতে পারছেন না, এমনকি মাছও ধরতে পারছেন না।
স্থানীয়রা জানান, ধূলিয়া বিলে সরকারিভাবে কিছু খাস জমি থাকলেও তা সাধারণ জনগণের জন্য উন্মুক্ত না রেখে ব্যক্তিগত দখলে রাখা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অবৈধ। তারা বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত বাবুল ফকিরের ভাই মামুন মিয়া জানান, “বিলের সরকারি খাস ৪৬ শতক জমির মধ্যে বাবুল ফকির ২৩ শতক এবং অপর ব্যক্তি মোনতাজ উদ্দিন ২৩ শতক জমি সরকার থেকে লিজ নিয়ে মাছ চাষ করছেন।”
তবে বাবুল ফকির নিজে দাবি করেন, “সরকারি জমির পাশাপাশি ১৫ জন মালিকের জমি লিজ নিয়ে প্রতি ১০ শতক জমির জন্য প্রতি বছর ৩ মন করে ধান প্রদান করি। এসবের চুক্তিপত্র আমার কাছে রয়েছে।”
কিন্তু কার কার কাছ থেকে জমি লিজ নিয়েছেন সেই তালিকা প্রকাশে তিনি রাজি হননি এবং চুক্তিপত্র দেখাতেও গড়িমসি করেন।
অন্যদিকে ভুক্তভোগীরা জানান, তারা নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর লিখিত অভিযোগ প্রস্তুত করলেও ভয়ের কারণে তা জমা দিতে পারছেন না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সারমিনা সাত্তার বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর মাধ্যমে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”