সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার যমুনা নদীতে জেগে ওঠা মনসুরনগর চরের জমি ভূমিহীনদের মাঝে বন্দোবস্ত না দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে চরাঞ্চলের সহস্রাধিক মানুষ।
বুধবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে মনসুরনগর ইউনিয়নের মাজনাবাড়ী গ্রাম থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে কাজিপুর উপজেলা প্রশাসন কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। পরে চরবাসীর পক্ষে একটি প্রতিনিধি দল সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাঈমা জাহান সুমাইয়ার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, যমুনার ওই চরজমি বহু বছর ধরে স্থানীয়রা চাষাবাদ ও বসতঘর নির্মাণ করে ভোগদখল করে আসছেন। জমিতে ফসলি মাঠ ছাড়াও গড়ে উঠেছে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, হাট-বাজারসহ নানা স্থাপনা। এখন সেই জমি ভূমিহীনদের মাঝে বন্দোবস্ত দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়ায় দীর্ঘদিনের দখলদারদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বিক্ষোভপূর্ব সমাবেশে বক্তব্য দেন:
- নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের
- কাজিপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম
- কমিউনিস্ট পার্টির নেতা ও বিশিষ্ট কবি আলতাফ হোসেন মাস্টার
- মনসুরনগর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল মান্নান
- কৃষকনেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন, জাহাঙ্গীর আলম, কেএম বেলাল হোসেন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, “এসএ ৫৬ ও আরএস ৫৩ নম্বর খতিয়ানের জমিগুলোর প্রজারা সিএস আমলে জমিদারের কাছ থেকে সেলামী দিয়ে জমি পত্তন নেন। পরবর্তীতে এসএ রেকর্ডে এসব জমি তাদের নামে অন্তর্ভুক্ত হয় এবং নিয়মিত খাজনাও প্রদান করেছেন।”
তারা আরও বলেন, আরএস জরিপের সময় ভ্রান্তভাবে জমিগুলো সিকস্তি দেখিয়ে সরকারের নামে রেকর্ড করা হয়, যদিও জমি ততদিনে পয়স্তি হয়ে জনসাধারণের দখলে ছিল। তারা ২০০৫ সাল পর্যন্ত এসব জমির খাজনা পরিশোধ করেছেন বলেও জানান।
বক্তারা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান, সরেজমিনে তদন্ত করে সিএস ও এসএ রেকর্ড অনুসারে পূর্বের মালিকদের পুনঃবহাল করা হোক এবং জমিগুলোকে প্রকৃত মালিকদের দখলেই রাখতে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। অন্যথায় সেখানে সামাজিক ও আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে বলেও তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে কাজিপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত ইউএনও নাঈমা জাহান সুমাইয়া বলেন,
“চরের জনগণ একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”