গৌরনদী (বরিশাল) প্রতিনিধি
দীর্ঘ ১৫ মাস পার হলেও বরিশালের গৌরনদী উপজেলার কমলাপুর গ্রামের পাটক্ষেতের আইল থেকে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত ব্যক্তির (৩৬) মরদেহের পরিচয় এখনও উদ্ঘাটিত হয়নি। ফলে হত্যাকাণ্ডের রহস্যেরও কোনো কূলকিনারা করতে পারেনি পুলিশ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ২০ জুলাই সকাল ৯টার দিকে খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামের মো. গোলাম নবি হাওলাদারের পাটক্ষেতের আইলে এক ব্যক্তির মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।
মরদেহটির গায়ে নেভি ব্লু রঙের টি-শার্ট ও জলপাই রঙের গ্যাবারডিন প্যান্ট ছিল। উচ্চতা প্রায় ৫ ফুট, গায়ের রং কালো, মুখমণ্ডল লম্বাটে, ছোট নাক এবং কোকড়ানো দাড়ি-মোচ ও চুল। মরদেহটি ফুলে গিয়েছিল এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে পচন ধরেছিল। দুই পায়ের হাঁটুর নিচে মাংসপেশি বিচ্ছিন্ন অবস্থায় পাওয়া যায়।
মরদেহের প্যান্টের কোমরের হুকে পাওয়া যায় “ইউনিক মডেল স্কুল, পলশাপুর, ০৫ নং ওয়ার্ড, বিসিসি, বরিশাল” লেখা একটি লেবেল, যেখানে লেখা ছিল—
নাম: রহমত খান
শ্রেণি: ২য়
রোল: ০২
পিতা: মিঠুন খান
মাতা: জেছমিন বেগম
মোবাইল: ০১৭৯৭৮৫৭২০৮
এছাড়াও মরদেহের পাশে পাওয়া যায় একটি লাল রঙের টর্চলাইট, একটি গ্যাসলাইট, একটি চশমা এবং একজোড়া চামড়ার স্লিপার। ধারণা করা হয়, ২০২৪ সালের ১৭ থেকে ২০ জুলাইয়ের মধ্যে অজ্ঞাত ব্যক্তিটি হত্যার শিকার হন এবং লাশটি গুমের উদ্দেশ্যে পাটক্ষেতের আইলে ফেলে রাখা হয়।
এ ঘটনায় খাঞ্জাপুর গ্রামের চৌকিদার মো. মাহবুব মৃধা বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে গৌরনদী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গৌরনদী থানার এসআই মো. নজরুল ইসলাম জানান, “মেডিকেল রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, নিহত ব্যক্তিকে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়েছিল। বিভিন্ন মাধ্যমে চেষ্টা করেও এখন পর্যন্ত মরদেহটির পরিচয় নিশ্চিত করা যায়নি। পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় হত্যার রহস্য উদঘাটন সম্ভব হচ্ছে না।”
স্থানীয়দের আশঙ্কা, মরদেহের পরিচয় শনাক্ত না হলে হত্যাকারীরা শেষ পর্যন্ত আইনের ফাঁক গলে পার পেয়ে যেতে পারে।