মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি
যশোরের মনিরামপুর ও অভয়নগর উপজেলার সীমান্তবর্তী মশিয়াহাটী বাজারে একটি জুয়েলার্স দোকানে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। রবিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে প্রায় ১০ থেকে ১২ জন মুখোশধারী সংঘবদ্ধ সশস্ত্র ডাকাত দল ‘সৌখিন জুয়েলার্স’ নামের দোকানে হানা দেয়।
দোকানটির মালিক মনিরামপুর উপজেলার কুলটিয়া গ্রামের গৌতম কর্মকার। জানা যায়, ডাকাতরা ভোররাত পর্যন্ত টানা দুই ঘণ্টা ধরে দোকানের গ্রিল কেটে ভেতরে প্রবেশ করে দুইটি লকার ভেঙে প্রায় ৪ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়।
এ সময় একই গলির আরেক দোকান রনজিত বিশ্বাসের নিউ অলংকার জুয়েলার্সে তালা ভাঙার চেষ্টা করলেও তারা ব্যর্থ হয়। ডাকাতরা আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে দিতে ৭ জন স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীর হাত-পা-মুখ বেঁধে ফেলে রাখে।
আটক ব্যক্তিরা হলেন— বিকাশ বিশ্বাস (৬০), প্রতিমা বিশ্বাস (৫৫), অমর বিশ্বাস (৫৮), বৈশাখী বিশ্বাস (৫২), অনিমেষ বিশ্বাস (৫৫), পরিমল বিশ্বাস (৬২) এবং কলেজ ছাত্র তৌশিক দাস (২০)।
প্রতিমা বিশ্বাস বলেন, “রাতে শব্দ শুনে বাইরে বের হলে ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে আমাদের আটকে ফেলে এবং আমার গলার ৬ আনা ওজনের চেইন (মূল্য প্রায় ৬০ হাজার টাকা) ছিনিয়ে নেয়।”
অন্যদিকে, তৌশিক দাস জানান, “আমাকে মারধর করে বেঁধে রাখে।”
অমর বিশ্বাস ও তার স্ত্রীও জানান, “আমাদের ঘুম থেকে ডেকে বাইরে এনে একইভাবে বেঁধে ফেলে।”
দোকান মালিক গৌতম কর্মকার বলেন, “রাত তিনটার দিকে পাশের সেলুনের মালিক জয় দাস আমাকে ফোনে জানালেও স্পষ্ট কিছু বুঝতে পারিনি। সকালে এসে দেখি দোকানের গ্রিল কাটা, দুটি লকার ভাঙা ও ভেতর সম্পূর্ণ লণ্ডভণ্ড অবস্থায় পড়ে আছে।”
তিনি আরও জানান, ডাকাতরা এক ভরি ওজনের নাকফুলের বাক্স, দুই জোড়া স্বর্ণের কানের দুল, ২৫ ভরি রূপা ও নগদ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে।
মশিয়াহাটী বাজার কমিটির সভাপতি মিহির বিশ্বাস জানান, “ঘটনাটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আজ সন্ধ্যায় বাজার কমিটির জরুরি সভা ডেকে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।”
নেহালপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই রেজাউল করিম বলেন, “মশিয়াহাটী বাজার অভয়নগর থানার আওতাধীন। আমরা বিষয়টি অভয়নগর থানাকে জানিয়েছি।”
ঘটনার পর সোমবার সকালে মনিরামপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শহীদ মো. ইকবাল হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে অভয়নগর থানার ওসি এ কে এম রবিউল ইসলামও ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করেন।এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    