মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি
যশোরের মনিরামপুরে বন্যা খাতুন (৩০) নামে এক ব্র্যাক কর্মীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৭ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার চিনাটোলা বাজারের ‘শ্রুতি কুঠির’ নামের একটি ভাড়াবাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত বন্যা রাজবাড়ি জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার চর-আন্দারমানিক গ্রামের কালাম মুন্সির মেয়ে এবং মনিরামপুর ব্র্যাক অফিসের মাঠকর্মী ছিলেন।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে দেড় বছর বয়সী শিশুকন্যাকে রেখে আত্মহত্যা করেছেন তিনি। তবে বন্যার পরিবার দাবি করেছে, তাকে হত্যা করে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে স্বামী মেহেদী হাসান তপু পলাতক রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্বামী পরিত্যক্তা বন্যা খাতুনের সঙ্গে ব্র্যাকের ঋণ কার্যক্রমের মাধ্যমে পরিচয় হয় মনিরামপুর উপজেলার শ্যামকুড় গ্রামের মাহাবুর বিশ্বাসের ছেলে মেহেদী হাসান তপুর। প্রায় আড়াই বছর আগে তারা গোপনে বিয়ে করেন। কিন্তু তপুর প্রথম পক্ষের স্ত্রী ও সন্তান থাকায় পরিবার এ বিয়ে মেনে নেয়নি। পরে বন্যাকে চিনাটোলা বাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় রেখে সংসার শুরু করেন তপু।
বাড়িওয়ালার পরিবারের সদস্যরা জানান, শুক্রবার দুপুরেও তপু ও তার স্বজনরা বন্যার বাসায় এসেছিলেন। রাতে ঘরের ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় বন্যার ঝুলন্ত মরদেহ দেখা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ রাত ১১টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেয়।
নিহতের মা রাবেয়া বেগম অভিযোগ করে বলেন, “তপু বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়েকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করত। মেয়ের গলা ও শরীরে নখের দাগ দেখা গেছে। সে আত্মহত্যা করতে পারে না, তাকে হত্যা করা হয়েছে।”
অন্যদিকে তপুর পরিবারের দাবি, বন্যার সঙ্গে তপুর বিয়ের বিষয়টি তারা জানতেন না, পরে জানার পর মেনে নেননি। তাদের ভাষ্য, তপু চলতি বছরের ১২ জুন বন্যাকে তালাক দিয়েছেন।
মনিরামপুর থানার ওসি (তদন্ত) বদরুজ্জামান বলেন, “মরদেহ উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

