শামীম শেখ, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলা ইস্যুতে দায়ের করা তৃতীয় মামলাকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে।
সেইসাথে দায়েরকৃত মামলাকে পুঁজি করে নুরাল পাগলের বেয়াই সাংবাদিক শহীদুল ইসলামের বিরুদ্ধে অর্থ বানিজ্যের অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে উপজেলা ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকালে গোয়ালন্দ ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটির সভাপতি মাওলানা জালালউদ্দিন প্রামানিকের স্বাক্ষরে এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পত্র গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে জমা দেয়া হয়।
অভিযোগে বলা হয়েছে , “আপনি নিশ্চয়ই শহীদুল ইসলামের নাম শুনেছেন। সে নূরাল পাগলেন বিয়াই। সে এলাকায় চিটার শহীদ নামে পরিচিত। নুরাল পাগলের ঘটনায় সে ব্যাপক ভাবে চাঁদাবাজী করে মানুষকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। মামলার ভয় দেখিয়ে সে অনেক মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এবং আরো অনেকের কাছে টাকা দাবী করছে। এতে গোয়ালন্দের সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ ও বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে। এ নিয়ে যে কোন সময় দুঃখজনক ঘটনা ঘটে যেতে পারে। যাতে কোন দুঃখজনক ঘটনা না ঘটে সে ব্যাপারে আপনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।”
গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের আমলি আদালতে নুরাল পাগলার দরবারে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট, অগ্নি সংযোগ, কবর হতে লাশ তুলে পুড়িয়ে দেয়া ও হতাহতের ঘটনায় অভিযোগটি দায়ের করেন নুরাল পাগলের শ্যালিকা রাজবাড়ী সদর উপজেলার বাসিন্দা শিরিন বেগম।
আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামজিদ হোসেন অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন। মামলায় ৯৬ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত নামা আরো ৪/৫’শ জনকে আসামি করা হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, এ অভিযোগ নামায় অনেক নিরপরাধ ব্যাক্তিকে ষড়যন্ত্র করে জড়ানো হয়েছে এবং সহিদুল ইসলাম এটাকে ঘিরে অর্থ বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।
মামলার বিষয়ে ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী, গোয়ালন্দের বাসিন্দা এ্যাডঃ মোঃ মকিম মন্ডল বলেন, একই ঘটনায় একাধিক মামলা দায়েরের আইনত সুযোগ নেই। নুরাল পাগলার ঘটনায় পুলিশের গাড়ি ভাংচুর ও সরকারি কাজে বাঁধাদান এবং হত্যা, হামলা, ভাংচুর, লুটপাট, অগ্নি সংযোগের অভিযোগে আরো একটি দায়েরকৃত মামলা চলমান রয়েছে। দুঃখজনক বিষয় হলো আমি ঘটনার দিন ঢাকাতে অবস্হান করা সত্বেও এই মামলার আসামি। অনেক নিরপরাধ ও সম্মানি ব্যাক্তিকে এই মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় আসামি করা হয়েছে। আমি এ মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শহিদুল ইসলাম মুঠোফোন বলেন, “আমার নামে যে অভিযোগটি দেয়া হয়েছে সেটা সম্পন্ন মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন। আমি যদি নুরাল পাগলার ঘটনা বা মামলায় কারো কাছ থেকে কোন অর্থ নিয়ে থাকি বা দাবি করি তাহলে সেটা প্রমাণ করতে পারলে আমি প্রচলিত আইন অনুযায়ী শাস্তি মাথা পেঁতে নিবো।”
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাথী দাস বলেন, লিখিত অভিযোগটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

