মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
‘ময়লা ফেলা নিষেধ’ লেখা সাইনবোর্ড টানানো হলেও বাস্তবে তার উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মুন্সিবাজার উপ-স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে। সরকারি হাসপাতালের জমি হিসেবে চিহ্নিত ওই স্থানে প্রতিদিনই ফেলা হচ্ছে বাজারের ময়লা–আবর্জনা। ফলে পুরো এলাকা এখন দুর্গন্ধে নাকাল হয়ে পড়েছে পথচারী, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে সড়ক ঘেঁষে লাগানো টিনের সাইনবোর্ডে স্পষ্ট লেখা—‘সরকারি হাসপাতাল/প্রতিষ্ঠানে ময়লা–আবর্জনা ফেলা নিষেধ’। অথচ বোর্ডের পাশেই বড় বড় বর্জ্যের স্তুপ। হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনেও চোখে পড়ে আরেকটি ময়লার স্তূপ। দূর থেকে দেখলে বোঝার উপায় নেই এটি একটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বাজারের ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন দোকান পরিষ্কার করে সড়কের পাশেই ফেলে দেন আবর্জনা। এসব বর্জ্য পচে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র দুর্গন্ধ। এতে দুর্ভোগে পড়ছেন স্কুল–কলেজের শিক্ষার্থী, যাত্রী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সাধারণ মানুষ।
পথচারী রহিম মিয়া বলেন, “হাসপাতালের সামনে এভাবে ময়লার ভাগাড় মেনে নেওয়ার মতো নয়। বৃষ্টি হলেই এসব বর্জ্য রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে। এতে মশা-মাছিও বেড়ে গেছে।”
স্থানীয় শিক্ষার্থী মাহমুদ মিয়া বলেন, “হাসপাতাল এখন নিজেই অসুস্থ। সামনে ময়লার ভাগাড় থাকায় রোগী তো আসছেই না, সাধারণ মানুষও এদিকে আসে না।”
মুন্সিবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আজীজ আহমদ বলেন, “দুর্গন্ধে ওই এলাকায় দাঁড়ানোই কষ্টকর। অভিযোগ করেও কোনো সমাধান হয়নি।”
মুন্সিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হিমেল চৌধুরী বলেন, “বাজারে ময়লা রাখার নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় এখানে ফেলতেই হচ্ছে। সরকারি জায়গা বলে আমরা কিছু করতে পারছি না।”
এ বিষয়ে মুন্সিবাজার ইউপি চেয়ারম্যান নাহিদ আহমদ তরফদার জানান, “আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিষয়টি উত্থাপন করেছি। ইউএনও দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।”
কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম ভূঁইয়া বলেন, “বাজার কর্তৃপক্ষ ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে আগে জানিয়েছি, তবে সমাধান হয়নি। আবার বসে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাখন চন্দ্র সূত্রধর বলেন, “যেখানে ময়লা ফেলা হচ্ছে সেটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জমি। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

