যশোর প্রতিনিধি
যশোরে হঠাৎ করেই বেড়েছে শীতের তীব্রতা। ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ার কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জেলার স্বাভাবিক জনজীবন। টানা তিন থেকে চার দিন ধরে উত্তর দিক থেকে বয়ে যাওয়া ঠান্ডা বাতাসে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।
শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) যশোরে চলতি শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যশোর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিস জানায়, সকাল থেকেই ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাসের কারণে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে। দুপুরের দিকে সূর্যের দেখা মিললেও রোদের তাপ ছিল খুবই কম।
ঘন কুয়াশার কারণে অনেক সময় ঝিরঝির বৃষ্টির মতো অনুভূতি সৃষ্টি হচ্ছে। হাড়কাঁপানো ঠান্ডায় শুধু মানুষ নয়, প্রাণিকুলও কষ্টে রয়েছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া ও নিম্নআয়ের মানুষ। বেলা বাড়লেও শীতের কারণে ঘর থেকে বের হতে বেগ পেতে হচ্ছে তাদের।
শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপও বৃদ্ধি পেয়েছে। জ্বর, সর্দি, কাশি ও ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই। চিকিৎসকরা শীতজনিত রোগ থেকে রক্ষা পেতে গরম কাপড় ব্যবহার, গরম পানি পান এবং প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।
৭০ বছর বয়সী বৃদ্ধা শ্রীধর ঠাকুর বলেন, “এবার শীত অনেক বেশি। বয়স্ক মানুষদের জন্য খুব কষ্টকর। বেলা একটার পর একটু রোদ উঠলে সারাদিন রোদে দাঁড়িয়ে থাকি, তবুও শীত কমে না।”
চৌগাছা উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের ৮০ বছরের বৃদ্ধা বেগম খাতুন জানান, তার নিজের কোনো জায়গা-জমি নেই। অন্যের জমিতে ছোট একটি ঘরে থাকেন। প্রচণ্ড শীতে দিন-রাত আগুন পোহাতে হয়। দিনের বেলা পাতা কুড়িয়ে রাখেন, আর বিকেল হলেই আগুন জ্বালান। তিনি বলেন, “কয়েক দিন ধরে শীত আর বাতাস খুব বেশি। এতে খুব কষ্ট হচ্ছে।”
এদিকে, শীত আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তাই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার পাশাপাশি শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।

