সবিতা রায়, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
আজ মার্কসবাদী ও প্রগতিশীল চেতনায় বিশ্বাসী তরুন কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ৭৪ তম মৃত্যুদিন। তিনি কলকাতার কালিঘাট এলাকায় ৪৩নং মহিম হালদার স্ট্রীটে মামার বাড়িতে বাবা নিবারন ভট্টাচার্য, মা সুনিতা দেবীর কোল জুড়ে ১৯২৬ সালের ১৫ আগস্ট জন্মগ্রহন করেন। কবির পূর্ব পুরুষের বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ার ঊনশিয়া গ্রামে।
কবি সুকান্ত ছোট বেলায় প্রথমে কমলা বিদ্যামন্দিরে লেখা পড়া শুরু করেন,তার পর বেলেঘাটা দেশবন্ধু হাইস্কুলে ভর্তি হন, ১৯৪৫ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষার পর থেকে বামরাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। এ সময়ে তিনি ছাত্র আন্দোলন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ,তেলাল্লিশের মন্বন্তর ফ্যাসিবাদী আগ্রাসন,সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার বিরুদ্ধে কলম ধরেন। ১৯৪৪ সালে তিনি বাম রাজনীতির সদস্য হন। কবি সুকান্তের লেখা পড়া আর হয়ে ওঠেনি।
কবি সুকান্তের বন্ধু কবি অরুনাচল বসুর মাতা সুকান্তকে পুত্র স্নেহে আগলে রেখেছিলেন। কবির জীবনের বেশিরভাগ সময় কেটেছে কলকাতার বেলেঘাটার ৪৩হরমোহন ঘোষ লেনের বাড়িতে, বাড়িটি এখনো সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে সুকান্তের স্মৃতি নিয়ে। পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সুকান্তের সম্পর্কিত ভ্রাতুষ্পুত্র।
ক্ষণজন্মা মার্কসবাদী তরুন কবি সুকান্ত অল্প সময় লেখার সুযোগ পেয়েছেন।তিনি কমিউনিস্ট পার্টির পত্রিকা দৈনিক স্বাধীনতা-র ১৯৪৫ সালে,” কিশোর বিভাগ” সম্পাদনা করতেন। অভাব, অনটন, অসুখ তাঁজে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরেছিল। তবুও তিনি দমে যাননি রানু দিদির অনুপ্রেরণায় লিখে গেছেন একের পর এক কবিতা সহ গীতিনাট্য,প্রবন্ধ,তবে তাঁর কবিতাই বেশি। প্রলেতারিয়েতের কবি সুকান্তের উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে, “ছাড়পত্র” “ঘুমনেই” “অভিযান” “মিঠেকড়া” “পূর্বাভাস” ” “গীতিগুচ্ছ”প্রভৃতি স্বতন্ত্রস্থান অধিকার করেছে। দিনমজুরের কবি সুকান্ত অভাবী মানুষের ভাষা বুঝতেন,তাই সহজ, সরল ভাষায় কাব্য রচনা করতেন। মাত্র ২১ বছর বয়সে ১৯৪৭ সালের ১৩ ই মে ম্যালেরিয়া ও যক্ষারোগে আক্রান্ত হয়ে কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
কবির মৃত্যুদিনে নবধারা পরিবারের পক্ষ থেকে কবিকে জানাই গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।
One thought on "মার্কসবাদী কবি সুকান্তের আজ মৃত্যুদিন"