প্রিন্ট এর তারিখঃ অক্টোবর ৮, ২০২৫, ৪:৫২ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২২, ১২:০২ পূর্বাহ্ণ
কোটালীপাড়ার ২ হাজার একর জমির বোরো চাষ ব্যাহত

কোটালীপাড়া প্রতিনিধি :
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার তারাইল বিল বছরের অধিকাংশ সময় জলমগ্ন থাকে। পৌষ মাসে বিল থেকে পানি নেমে যায়। তারপর কৃষক সেখানে বোরো আবাদ করেন। পানি আসার আগেই কৃষক বৈশাখ মাসে বিলের জমি থেকে ধান কেটে নেন।
গত আষাঢ় মাসে ভাঙন প্রতিরোধে পাথুরিয়া খালের মুখে বাঁধ দেয়া হয়। এ খাল দিয়েই তারাইল বিলের পানি শৈলদহ নদীতে ওঠা নামা করে। খালের মুখে বাঁধ রয়েছে। তাই শুস্ক মৌসুমে বিলের পানি নামছে না। ওই ২ হাজার একর বোরো ধানের জমি জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। সেখানে কৃষক চাষাবাদ করতে পারছে না। এ বিলের অধিকাংশ মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল নয়। বিলের জমিতে বছরে একটি মাত্র ফসল বোরো ধান ফলে। এ ধান দিয়েই বিলবাসী সারা বছরের খাবার ও অন্যান্য প্রয়োজন মেটান। এদিকে ধান রোপনের মৌসুম শেষ হয়ে যাচ্ছে। তাই বোরো চাষাবাদ নিয়ে কৃষকের দুশ্চিন্তার শেষ নেই।
তারাইল গ্রামের কৃষক রঞ্জন বাইন (৫৬) বলেন, তারাইল-পাচুড়িয়া বণ্যা নিয়ন্ত্রণ ও সেচ প্রকল্পের ৩ নং পোল্ডারের মাধ্যমে শৈলদহ নদী থেকে পাথুরিয়া খাল দিয়ে তারাইল বিলের পানি ওঠা নামা করে। বর্ষা সৌসুমে পানির চাপে বণ্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও ৩ নং পোল্ডার ভাঙনের মুখে পড়ে। পানি উন্নয়ন বোর্ড পাথুরিয়া খালের মুখে বাঁধ দিয়ে ভাঙন প্রতিরোধ করে। বাঁধের কারণে শুস্ক মৌসুমে বিলের পানি খাল দিয়ে নদীতে নামতে পারছে না। তাই তারইল বিলের তারাইল, সোনাখালী, ফুলবাড়ি, চর গোপালপুর গ্রামের ২ হাজার একর জমিতে জলাবদ্ধতার সৃস্টি হয়েছে। এতে ৩ হাজার কৃষক জমিতে চাষাবাদ করতে পারছেন না।
সোনাখালী গ্রামের কৃষক জমির খান (৬০) বলেন, বছরে আমাদের বিল মাত্র একবার জাগে। তারপর সেখানে আমরা ধান চাষাবাদ করি। যা ফলাই তা দিয়ে সারা বছর চলতে হয়। এ বছর জলাবদ্ধতার কারণে চাষাবাদ করতে পারছি না। আমরা দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
তারাইল গ্রামের কৃষক নেপাল মজুমদার (৫৫) বলেন, প্রতি বছর পৌষ মাসের প্রথম সপ্তাহে পানি নেমে যায়। তারপর আমরা ধান রোপন করি। এ বছর পৌষ মাস চলে গেছে। মাঘ মাসও বিদায়ের পথে। কিন্তু বিলের পানি নামছে না। তাই ধান চাষ নিয়ে আমরা মহা অনিশ্চয়তায় পড়েছি।
তারাইল গ্রামের কৃষক সুকলাল মন্ডল (৫০) বলেন, সরকার দ্রুত পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করলে আমরা ধান রোপন করতে পারব। ধান রোপনের ব্যবস্থা করে দিয়ে সরকার আমাদের রক্ষা করবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
কেটালীপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ নিটুল রায় বলেন, কোটালীপাড়ার বিল এলাকায় অনেক উন্নয়ন কাজ হয়েছে। এসব কাজ করার সময় খাল-নালা ঠিকাদাররা বাঁধ দিয়ে বন্ধ করেছেন। উন্নয়ন কাজ শেষ হওয়ার পর তারা খাল-নালার বাঁধ খুলে দেননি। তাই ধান চাষা মৌসুমে কিছু কিছু জায়গায় জলাবদ্ধতার সৃস্টি হয়েছে। আবার কোথাও সেচ সমস্যা হচ্ছে। প্রকৌশল বিভাগের মাধ্যমে আমরা এ গুলো চিহ্নিত করছি। জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, এসিল্যান্ড ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় আমরা খাল ও নালার বঁাধ কেটে দিচ্ছি। এতে কৃষক জলাবদ্ধা থেকে মুক্তি পাচ্ছেন।
গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ফইজুর রহমান নবধারা কে বলেন, তারাইল-পাচুরিয়া বণ্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ রক্ষার জন্য ৩ নং পোল্ডারের খালের মুখে বাঁধ দেয়া হয়েছিলো। ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করে কৃষকের চাষাবাদের সুবিধার্থে সেচ ও পানি নিস্কাশনের বিকল্প ব্যবস্থা করে দেয়া হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.