জেলা প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জঃ
গোপালগঞ্জে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের জমিতে গড়া অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে গিয়ে স্থানীয় যুবলীগ নেতার নির্দেশে হামলার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন সওজের চার কর্মকর্তাসহ ছয়জন। এসময় উচ্ছেদ অভিযানে থাকা সরকারি গাড়ি ভাঙচুর করেন হামলাকারীরা।
বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) দুপুরে জেলা শহরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের বেতগ্রামে গোলচত্বর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গোপালগঞ্জ জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য শেখ সাহাবুদ্দিন হিটুর বিরুদ্ধে হামলায় নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
হামলায় আহতরা হলেন- সওজের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী কুমারেশ বিশ্বাস, উপ-সহকারী প্রকৌশলী কামরুজ্জামান, বিল্লাল হোসেন, সার্ভেয়ার সোহাগ ও দুই গাড়িচালক।
স্থানীয় ও হামলায় আহতরা জানান, টেকেরহাট-গোপালগঞ্জ-ঘোনাপাড়া ও গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া-পয়সারহাট সড়ক নির্মাণ ও প্রসস্তুকরণের লক্ষে গত ২৯ মার্চ থেকে টেকেরহাট-গোপালগঞ্জ সড়কে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে সড়ক বিভাগ। গত ২৯ ও ৩০ মার্চ উচ্ছেদ অভিযান শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলেও বিপত্তি বাধে বৃহস্পতিবারের উচ্ছেদ অভিযানে। ওইদিন সকাল ১০টার দিকে গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া-পয়সারহাট সংলগ্ন বেদগ্রাম গোলচত্বর এলাকায় অভিযান শুরু করে বেশ কয়েকটি কাঁচা স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।
এরপর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয় যুবলীগ নেতা শেখ সাহাবুদ্দিন হিটুর দখলে থাকা সওজের প্রায় ৩০ শতক জমিতে অবৈধভাবে গড়ে তোলা স্থায়ী স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু হয়। এসময় তার নেতৃত্বে অন্তত ২০/২৫ জন লোক সওজ কর্মকর্তাদের ওপর হামলা চালান। মারধর করে ছয়জনকে আহত করেন হামলাকারীরা। এসময় সওজের তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করেন তারা। বাদ যায়নি অভিযানে নেতৃত্বে দেওয়া সওজ খুলনা জোনের এস্টেট ও আইন কর্মকর্তা অনিন্দিতা রায়ের গাড়িও। হামলার পর অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে, কাউকে আটক করেনি পুলিশ। এ ঘটনার পর স্থগিত করা হয় উচ্ছেদ অভিযান।
সওজ খুলনা জোনের এস্টেট ও আইন কর্মকর্তা অনিন্দিতা রায় বলেন, শেখ সাহাবুদ্দিন হিটু স্থানীয় যুবলীগ নেতা হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে সওজের জমি দখল করে রেখেছেন। অবৈধভাবে স্থায়ী ভবন গড়ে ব্যবসা করছেন। তাকে বারবার জমি ফাঁকা করার নোটিশ দেওয়া হলেও তিনি কর্ণপাত করেননি। উচ্ছেদ অভিযানে গিয়ে তাকে সহায়তা করার জন্য বলেছিলাম। কিন্তু তিনি শুরু থেকেই বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। উচ্ছেদ অভিযান শুরু হলে নিজে নির্দেশ দিয়ে আমাদের কর্মকর্তাদের ওপর হামলা করেছেন। গাড়ি ভাঙচুর করেছেন। বিষয়টি তাৎক্ষণিক আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়েছি।
এ বিষয়ে জানতে শুক্রবার সন্ধ্যায় ফোন করা হলে যুবলীগ নেতা শেখ সাহাবুদ্দিন হিটু তার নেতৃত্বে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ওই রাস্তার পাশে চা-স্টলসহ বেশকিছু ছোট ছোট দোকানপাট রয়েছে। সেগুলো উচ্ছেদ করতে গেলে দোকানদাররা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে একটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এছাড়া সওজের কোনো নোটিশ পাননি জানিয়ে তিনি বলেন, আমার নেতৃত্বে হামলার বিষয়টি সত্য নয়। বরং আমি, স্থানীয় বাজার কমিটির সভাপতিসহ আরও যারা ছিলেন তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপকারীদের সরিয়ে দিয়েছি।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, হামলার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। যারা সরকারি জমি দখল করে রেখেছেন তাদের সবাইকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্থাপনা অপসারণ করে নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.