সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের ভূয়া সীলমোহর ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়াই ছিল সিন্ডিকেটটির জীবিকা নির্বাহের মূল কাজ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এমন খবর পেয়ে অভিয়ান চালিয়ে প্রতারক চক্রের একজন রিপন বিশ^াসকে হাতেনাতে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৬। গ্রেফতার রিপন বিশ^াস তেরখাদার কথিত প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বলে পরিচিত! তবে এই সিন্ডিকেটের মূলহোতা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। গত শনিবার র্যাবের এ অভিযানের ঘটনায় তেরখাদা থানায় মামলা হয়েছে। আজ রবিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।
গ্রেফতারকৃত প্রতারক রিপন বিশ্বাস (৩১) তেরখাদা উপজেলার ভুজনিয়া গ্রামের প্রমথ বিশ্বাসের পুত্র। তার কাছ থেকে জালিয়াতি কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নকল ২৯টি সীলমোহর, দুই পাতার ভূয়া প্রত্যয়ন পত্র, নয় পাতা নকল ওয়ারিশ কায়েম সনদ, ২২ পাতা ভূমি অফিসের পর্চা/খতিয়ান, একপাতা নকল সীলমোহর এবং একটি মোবাইল ফোন জব্দ করে র্যাব।
র্যাব সূত্রে জানা গেছে, র্যাব-৬ গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে জানতে পারে যে, তেরখাদা থানা এলাকায় কতিপয় প্রতারক এলাকার সহজ-সরল বিপদগ্রস্ত ব্যক্তিদের জিম্মি করে বিভিন্ন জাল সনদ ও সীলমোহর তৈরী করে প্রতারনার মাধ্যমে জাল-জালিয়াতি করে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নেয়। এ তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৬, (স্পেশাল কোম্পানি) খুলনার একটি আভিযানিক দল প্রতারক চক্র’কে গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় ২৭ আগস্ট দুপুর পৌনে ২টার দিকে তেরখাদার ভুজনিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতারক রিপন বিশ্বাসকে গ্রেফতার করে র্যাব। জব্দকৃত আলামত ও গ্রেফতারকৃত আসামীকে তেরখাদা থানায় হস্তান্তর করা হয়। গতকাল রবিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
তবে প্রতারক চক্রের মূলহোতা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয় ও ক্ষতিগ্রস্তদের। মূলত তারই ছত্রছাঁয়ায় থেকে রিপন বিশ^াস যাবতীয় প্রতারণামুলক কার্যক্রম পরিচালনা করতো। পুলিশ-প্রশাসন বা ভুক্তভোগীদের কাছে কোন প্রকার ধরা পড়লে সিন্ডিকেট প্রধান সেই প্রতারক সর্দারই রিপন বিশ^াসকে উদ্ধার করতো বলে জানেন স্থানীয়রা। সম্প্রতি আজগড়া ইউপি চেয়ারম্যান কৃষ্ণ মেমন রায়ের সীলমোহর ও স্বাক্ষর জাল-জালিয়াতিকালে ধরা পড়েছিল রিপন বিশ্বাস। পরে সিন্ডিকেট প্রধান সেই কথিত সাংবাদিকই তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে এসেছিল। অবিলম্বে প্রতারক সিন্ডিকেটটি সমূলে গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির জোর দাবি স্থানীয়দের।
তেরখাদা প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান কমিটির আহবায়ক আলহাজ¦ মোঃ লিয়াকত হোসেন বলেন, প্রতারক সিন্ডিকেটের মূলহোতা সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতা বর্জিত কর্মকান্ডে লিপ্ত হওয়ায় তাকে তেরখাদা প্রেসক্লাব থেকে বহিস্কার করেছিলাম। পরে সে নিজে একই নামে প্রেসক্লাব খুলে, নিজেকে সভাপতি এবং গ্রেফতারকৃত রিপন বিশ্বাসকে সাধারণ সম্পাদক বানায়। কার্যত্ব, কথিত প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রিপন বিশ্বাসের প্রতারণা চক্রের মূলহোতাই তার ক্লাবের সভাপতি।