মোঃ আসাদুজ্জামান আসাদ
পর্যটনশিল্পের অপার সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ার রোল মডেল।
টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য দিন বদলের সনদ ‘রূপকল্প-২০২১’ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে পর্যটনশিল্পের ওপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে বিদেশি পর্যটক আসার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে।এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নকল্পে প্রত্যাশিত অবকাঠামো উন্নয়ন, আন্তর্জাতিক প্রচার-প্রচারণা বৃদ্ধি, পর্যাপ্ত বিনোদন বিকাশের সুযোগ,নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, পর্যটন এলাকায় হোটেল মোটেল বৃদ্ধি এবং পর্যটন ক্ষেত্রে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে হবে।এগুলোর বাস্তবায়নই নবদিগন্তের ভোরের সূর্যের আলোর ন্যায় আলোকিত হবে অমিত সম্ভাবনার বাংলাদেশের পর্যটন।যার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হতে পারে স্বরূপকাঠী।
এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড স্বরূপকাঠীর পর্যটনকে বিকশিত করার লক্ষে ইতোমধ্যেই নানামুখি কর্মসুচি হাতে নিয়েছে।বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড বিপনন ও ব্রান্ডীং এর উপ পরিচালক মহিবুল ইসলাম এর আন্তরিকতার বাস্তবায়নকল্পে ট্যুরিজম বোর্ডের সাথে কাজ করে যাচ্ছে ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন স্বরূপকাঠী (ট্যুয়াস)।
কৃষিতে বিপ্লব ঘটানো স্বরূপকাঠী, পর্যটনের জন্য একটি আদর্শ উপজেলা হতে পারে সমগ্র বিশ্বে।কথাগুলো যোগ করেন ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন এর সাধারন সম্পাদক মোঃ রফিকুল ইসলাম। তিনি আরও জানান, স্বরূপকাঠীতে রয়েছে কয়েক হাজার মুরগীর ফার্ম,যা ব্যাক্তি মালিকানায় তৈরী হয়েছে।এখানে পুকুরের উপরে এই ফার্মের নিচে মাছ চাষ পদ্ধতি কৃষিতে ঘটিয়েছে আরেক বিপ্লব। যা সমগ্র দেশের জন্য অনুকরনীয়।
স্বরূপকাঠি উপজেলা প্রানী সম্পদ অফিসার তাপস কুমার ঘোষ জানান এখানে মুরগী ফার্মের নিচে পুকুরে মাছ চাষ ব্যবসায়ীদের ঝুকি অনেক হ্রাস করেছে।এ কারনে দৈত এ কৃষি পদ্ধতি দিনকে দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে স্বরূপকাঠীতে।বেসরকারি হিসেবে এখানে প্রায় দুই হাজার মুরগীর ফার্ম রয়েছে যা স্বরূপকাঠীর মুরগীর মাংস, ডিম ও মাছের চাহিদা পুরন করে বিভিন্ন উপজেলায় রপ্তানী হয়।
উপজেলা মৎস অফিসার ফারিয়া কনক জানান ১৭০০ পুকুর এবং ৪৫০ টি ঘের রয়েছে এ উপজেলায়।এসব পুকুর ও ঘের থেকে কয়েক হাজার মেট্রিকটন কার্প জাতিয় মাছ উৎপাদন হয় এখানে।
স্বরূপকাঠী কৃষি অফিসার চপল কৃষ্ণ নাথ জানান এ উপজেলায় ২৪৭ একর জমি
ফুলের চারা উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত হয়।শত শত ধরনের ফুলের চারা উৎপাদনের সাথে প্রায় ২ হাজার কৃষক ও শ্রমিক জড়িত।
ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চারা উৎপাদনকার্যে প্রায় ৫০০ শত কৃষক ৩২ হেক্টর পানিতে নিমজ্জিত জমিতে কাজ করছেন।এছারা ৫০০ হেক্টর জমিতে প্রায় ১৪০০০ কৃষক বনজ ও ফলজ গাছের চারা উৎপাদন করে এবং ১৮শত হেক্টর জমিতে ২০০০০ কৃষক সবজি উৎপাদন করেন।
কৃষি অফিসার আরও জানান বাংলার আপেলখ্যাত আটঘর কুড়িয়ানার পেয়ারা ১৬০৫ একর জমিতে চাষ হয়।এ খাতে ৮ হাজার কৃষক জড়িত রয়েছে।এছারা এ ইউপিতে ১৬০ হেক্টর জমিতে আমড়া চাষে ১৮০০ কৃষক রয়েছেন।দেশের মধ্যে চাষ হওয়া মাল্টার বড় অংশ এখানেই চাষ হয়।১হাজার কৃষকএখানে ১৯৭ একর জমিতে মাল্টার চাষ করেন।এ মাল্টা দেশের গন্ডি ছারিয়ে বিদেশেও বেশ সুনাম কুরিয়েছে।
পর্যটকদের জন্য আকর্ষন এ কৃষি খাত গত রিমেল নামক বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।যার আর্থিক মুল্য সরকারিভাবেই প্রায় অর্ধ শতকোটি টাকা নির্ধারন করা হয়েছে।স্বরূপকাঠীর মোট জনগনের আট এর ১ ভাগ মানুষ জড়িত রয়েছে এ খাতে।যত দ্রুত স্বরূপকাঠীর এখাতে সরকারের বিনিয়োগ বাড়বে তত দ্রুতই উন্নত হবে জীবনযাত্রা।দ্রুততার সাথে এ বিনিয়োগ স্বরূপকাঠীর পর্যটন শিল্পকে আরো বিকশিত করতে পারে বিশ্বের বুকে যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভুমিকা পালন করবে।