যবিপ্রবি প্রতিনিধি,রায়হান আহমদ
গাজায় চলমান ইজরাইল কর্তৃক নৃশংস হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে সোমবার (৭ এপ্রিল) ক্লাস-পরীক্ষাসহ সকল ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ডাক দিয়েছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (৬ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ ঘোষণা দেয় যবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী সোমবারের ধর্মঘটের (৭ এপ্রিল) আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমরা- “কোনো ক্লাস নয়, কোনো ল্যাব নয়, প্রতিদিনকার স্বাভাবিক কাজ নয়” এই আন্দোলনে অংশ নিচ্ছি। একটি জনগোষ্ঠীকে যখন বোমাবর্ষণ, ক্ষুধার্ত করে রাখা ও নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে, তখন আমরা নীরব থাকতে পারি না। এটি আমাদের নৈতিক দায়িত্ব যে আমাদের এবিষয়ে আওয়াজ তুলতে হবে, প্রতিবাদ জানাতে হবে। আমরা আশা করি সকল যবিপ্রবিয়ান ও দেশের সকল স্তরের শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবে। সকল গণহত্যা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত, আমরা ধর্মঘটে থাকব।
এ বিষয়ে ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী সিফাতুর রহমান বলেন, “গাজায় মানব ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম গণহত্যার সাক্ষী হচ্ছে আজ বিশ্ব। জালিমের আগ্নেয়াস্ত্র থেকে রেহায় পাচ্ছে না নিষ্পাপ শিশুরাও। যা সমস্ত বিশ্ববাসীকে কাঁদালেও একপ্রকার নিরব দর্শকের ভুমিকা পালন করছে আরব বিশ্ব এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো।কিন্তু আমরা চুপ করে থাকতে পারিনা,ইজরায়লি পণ্য বয়কট এবং ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’-তে একাত্মতা প্রকাশ করে গাজার প্রতি সংহতি জানাচ্ছি আমরা।”
কেমিকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ মিলন হোসেন বলেন, পৃথিবীর চোখের সামনে ধ্বংস হচ্ছে এক জাতির স্বপ্ন, ঘুমন্ত শিশুদের লাশ আজ বিবেককে প্রশ্ন করে — আমরা কি মানুষ? গাজার মাটিতে আজ কবরের চেয়েও সংকুচিত বসবাস, আকাশ থেকে বর্ষিত হচ্ছে মৃত্যু, আর জমিন জুড়ে শুধুই কান্নার শব্দ। তবুও নিস্তব্ধতা ভেঙে না কেউ, বিশেষ করে সেইসব আরব নেতৃত্ব যারা আজ নিজের প্রতিচ্ছবিকেও চেনে না।
আমি একজন সাধারন ছাত্র — কিন্তু তার চেয়েও আগে একজন মানুষ। মানুষ হিসেবে আমার দায় আছে নির্যাতনের বিপক্ষে দাঁড়ানোর। তাই গাজার ভাইবোনদের ডাকে সাড়া দিয়ে, আমি নিজেকে তাদের পাশে ভাবতে শিখেছি। আমি কোনো রাষ্ট্রনেতা নই, কোনো সংগঠনের মুখপাত্রও নই — তবুও আমার বিবেক চিৎকার করে, আমার কলম কাঁপে প্রতিবাদের ভাষায়।
এই ঘৃণা, এই বেদনা, এই সহানুভূতি — এটিই আমার প্রতিবাদ।
এছাড়াও বিশ্বব্যাপী চলমান এই মানবিক সংকটের প্রেক্ষিতে বৈশ্বিক ধর্মঘটের অংশ হিসেবে এই কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়েছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।