রুহুল আমিন, যশোর প্রতিনিধি
যশোরে এক সময় তালগাছ, খেজুর গাছ কিংবা যে কোনো ধরনের উঁচু গাছে শোভা বর্ধন করত বাবুই পাখির বাসা। এখন আর চোখে পড়ে না বললেই চলে। কারুশিল্পের নিখুঁত নিদর্শন, পরিশ্রম ও একাগ্রতার প্রতীক বাবুই পাখির বাসা হারিয়ে যেতে বসেছে। সম্প্রতি উপজেলার প্রেমবাগ ইউনিয়নের এরশাদ এতিমখানা মাদ্রাসার সামনে কয়েকটি তালগাছে বাবুই পাখির বেশ কয়েকটি বাসা দেখা গেছে।
সরেজমিন দেখা যায়, মাদ্রাসার সামনে কয়েকটি তালগাছের পাতাগুলোতে ঝুলছে বাবুই পাখির বেশ কয়েকটি বাসা। শিল্প শহর নওয়াপাড়া থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে দৃশ্যটি দেখতে ভিড় করছেন কৌতুহলী মানুষ।
জানা গেছে, বাবুই পাখিকে ‘তাঁতি পাখি’ বলে ডাকা হয়। গ্রীষ্মকাল থেকে তাদের প্রজনন মৌসুম। এ সময় পুরুষ বাবুই খড়কুটো জোগাড় করে নিজের ঠোঁট দিয়ে পাতা সেলাইয়ের মতো করে নিপুণভাবে বাসা গড়ে তোলে। বাবুইয়ের বাসা আগের মতো গ্রামের আঁকাবাঁকা পথে আর তেমনটি দেখা যায় না। তাল ও খেজুরগাছ কমে যাওয়ায় তাদের বাসা বানানোর উপযুক্ত স্থানও কমছে।
গ্রেমবাগ বাসিন্দা কাজল দফাদার বলেন, ২০ বছর ধরে আমাদের তালগাছে বাবুই বাসা বানায়। ছোটবেলায় এ দৃশ্য ছিল খুব স্বাভাবিক। এখন গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে, ফলে বাসাও হারিয়ে যাচ্ছে।
প্রেমবাগ ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান জসিম উদ্দীন খোকন বলেন, বাবুই পাখির বাসা এক সময় বাংলার গর্ব ছিল। আজ তা স্মৃতির পাতায়। তাদের রক্ষায় এখনই সচেতনতা ও উদ্যোগ প্রয়োজন। নইলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম শুধু বইয়ের পাতায় এসব দেখবে।
উপজেলার পল্লী মঙ্গল আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ খায়রুল বাসার বলেন, এ পাখিগুলো শুধু আমাদের প্রকৃতির সৌন্দর্য নয়, শিক্ষার্থীদের শিক্ষারও উপাদান। ওদের বাসা বানানো দেখেই আমরা শিখতাম ধৈর্য আর পরিশ্রম। এখন আর তেমন সেই দৃশ্য চোখে পড়ে না।
অভয়নগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন বলেন, বাবুই পাখি টিকিয়ে রাখতে তালগাছ, খেজুরগাছসহ দেশীয় গাছ-গাছালি বেশি করে লাগাতে হবে। পরিবেশবান্ধব কৃষি ও কীটনাশক নিয়ন্ত্রণেরও উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.