মো.জসিম উদ্দিন, দুমকি (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার খাল-বিল, নদী-নালায় নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল, বেহুন্দি, সুতিজাল, ভেসাল ও চায়না দুয়ারী জালের অবাধ ব্যবহার দিন দিন উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে দেশীয় প্রজাতির মাছ ও জলজ প্রাণীর অস্তিত্ব আজ হুমকির মুখে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রশাসনের নিরবতা এবং মৎস্য দপ্তরের লোকদের ‘ম্যানেজ’ করেই চলছে এই অবৈধ কর্মকাণ্ড।
জানা যায়, উপজেলার নলদোয়ানী, বুদাই, তক্তাখালী, ভাড়ানী, গোদার, মোল্লাখালী, বাদ্দার, কচ্ছপিয়া, গাবতলি, দাসপাড়া, কদমতলা, পিছাখালি, জামলা ও কোহারজোরসহ অন্তত ২৫টি খাল এবং প্রায় সব বিল-নালাতেই নিষিদ্ধ জালের অবাধ ব্যবহার দেখা যাচ্ছে। বর্ষার শুরুতেই এসব জালের মাধ্যমে ডিম ছাড়ার আগেই পোনা মাছ ধরা হচ্ছে, যা প্রাকৃতিক প্রজনন প্রক্রিয়াকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে।
লেবুখালী ইউনিয়ন মৎস্যজীবী দলের সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন জানান, “পায়রা নদী থেকে বয়ে যাওয়া ভাড়ানী খালে প্রকাশ্যে অবৈধ বেহুন্দি জাল ফেলে মাছ ধরা হচ্ছে। মৎস্য অফিসকে জানালেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেই। এতে আমরা হতাশ।”
দুমকি উপজেলার বিভিন্ন বাজার যেমন— নতুন বাজার, পীরতলা, বোর্ড অফিস বাজারসহ অনেক জায়গায় প্রকাশ্যে এসব নিষিদ্ধ জাল বিক্রি হচ্ছে প্রশাসনের নাকের ডগায়। এতে প্রশ্ন উঠেছে স্থানীয় প্রশাসনের তদারকি ও নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা নিয়ে।
একসময়ের পরিচিত দেশীয় মাছ যেমন— শৌল, বোয়াল, গজার, মাগুর, শিং, কই, সরপুঁটি, পাবদা, আইড়, বাইম, খলসে, রিঠা, বেতাগা, বাঁশপাতা, রয়না ও কালিবাউস আজ বিলুপ্তির পথে। শুধু মাছই নয়, অবৈধ দখল ও নিষিদ্ধ জালের কারণে হুমকিতে পড়েছে জলজ সাপ, ব্যাঙ, শামুকসহ অনেক প্রজাতির জলজ প্রাণী।
এ বিষয়ে দুমকি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহফুজুর রহমান জানান, “আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। তবে এ কাজে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
স্থানীয়দের মতে, এখনই কঠোর ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে দেশীয় মাছ ও জলজ জীববৈচিত্র্য সম্পূর্ণ হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।