মাসুদুর রহমান খান, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমানের বিধ্বস্ত হয়ে নিহত দুই শিক্ষার্থীর বাড়ি লক্ষ্মীপুরে। এক দিনের ব্যবধানে দুটি পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া, পুরো গ্রামে বইছে শোকের মাতম।
মর্মান্তিক ঘটনায় নিহত সপ্তম শ্রেণির ছাত্র সায়ান ইউসুফের (১৪) মরদেহ মঙ্গলবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের পালবাড়ি এলাকায় তার গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়। বিকেল ৩টায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। সায়ানের মৃত্যুতে বাড়িতে হৃদয়বিদারক পরিবেশ সৃষ্টি হয়। মা শামীমা শাম্মী ও দাদী কামরুন নাহার আহাজারিতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। শোকসন্তপ্ত পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে আশপাশের শত শত মানুষ ভিড় করেন বাড়িতে।
জানা যায়, সোমবার দুপুরে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। মুহূর্তেই ভবনের একটি অংশে আগুন ধরে যায়। ওই সময় শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ছিল। আগুনে দগ্ধ হয়ে সায়ান ইউসুফ গুরুতর আহত হন। তাকে দ্রুত জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানেই সোমবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত সায়ান মাইলস্টোন স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাবা এএফএম ইউসুফ মাইলস্টোন কলেজ শাখার রসায়নের সহকারী অধ্যাপক এবং মা শামীমা শাম্মী স্কুল শাখার রসায়নের শিক্ষিকা। পরিবারটি উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরের একটি বাসায় বসবাস করছিল।
একই দুর্ঘটনায় সদর উপজেলার পার্বতীনগর ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের আফনান ফায়াজ (১৩) নামের আরেক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আফনানকে মঙ্গলবার সকালে ঢাকায় দাফন করা হয়েছে।
মাইলস্টোন ট্র্যাজেডিতে প্রাণ হারানো সায়ান ও আফনান—দুজনই লক্ষ্মীপুরের গর্ব ছিল। আজ তাদের শূন্যতা জেলাজুড়ে বিষাদের ছায়া ফেলেছে। পরিবার ও এলাকাবাসী এই অকাল মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ।

