শাকিল মাহমুদ বাচ্চু, উজিরপুর (বরিশাল) প্রতিনিধি
বরিশালের উজিরপুরে মাদকের টাকা না দেওয়ায় এক মাদকাসক্ত পুত্রের হাতে পিতা নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) বেলা ২টার দিকে উপজেলার বড়াকোঠা ইউনিয়নের পশ্চিম খাটিয়ালপাড়া গ্রামে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
নিহত শাহে আলম খান (৫৫) বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বের্ড) এর অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী ছিলেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তার একমাত্র ছেলে শাহনেওয়াজ শিমুল (৩০) দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত। ঘটনার দিন সে বাবার কাছে মাদক সেবনের জন্য টাকা চায়। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায়, শিমুল ক্ষিপ্ত হয়ে তার পিতাকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। ঘটনাস্থলেই শাহে আলমের মৃত্যু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় যুবদল নেতা সুমন জানান, “শিমুল তার বাবার কাছে প্রায়ই মাদকের টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করত। বৃহস্পতিবারও সে টাকা চেয়ে পায়নি, তখনই ক্ষিপ্ত হয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়।”
স্থানীয়রা ঘাতক শিমুলকে হাতে-নাতে ধরে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে এবং পরে থানায় খবর দেয়। উজিরপুর মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে এবং ঘাতক পুত্রকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুস সালাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, মাদকসেবনের টাকা না পেয়ে ছুরি দিয়ে পিতাকে গলায় আঘাত করে হত্যা করেছে পুত্র শাহনেওয়াজ শিমুল। স্থানীয়রা তাকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছেন। ঘটনার পেছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হচ্ছে বলে জানান ওসি।
স্থানীয়রা আরও জানান, নিহত শাহে আলমের দুই স্ত্রী ছিলেন। প্রথম স্ত্রী সেফালী বেগমের ঘরেই জন্ম নেয় শিমুল, যিনি দীর্ঘদিন ধরেই মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং পারিবারিক কলহ ছিল নিত্যদিনের বিষয়। শেষ পর্যন্ত সেই কলহই এক মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডে রূপ নেয়।