মাসুদুর রহমান খান ভুট্টু, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ ও অমাবস্যার প্রভাবে মেঘনা নদীতে পানি বাড়ায় লক্ষ্মীপুরের কমলনগর ও রামগতি উপজেলার নদীতীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। হঠাৎ জোয়ারের পানিতে বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট, ফসলি জমি ও মাছের ঘের ডুবে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন এসব এলাকার লক্ষাধিক মানুষ।
গত শনিবার বিকেল থেকে নদীতে পানি বাড়তে শুরু করে। সন্ধ্যার দিকে পানি কিছুটা কমলেও কয়েকদিন ধরেই চলমান এই প্লাবনে জনজীবনে নেমে এসেছে বিপর্যয়। অনেকের বাড়িঘরের ভেতর পর্যন্ত পানি ঢুকে পড়েছে, চুলা জ্বালানো বন্ধ হয়ে গেছে, গবাদিপশু রাখার স্থান নেই, ফসল ও বীজতলা পানির নিচে।
কমলনগরের মধ্য ও পশ্চিম চরমার্টিন এলাকায় দেখা গেছে, জোয়ারের পানি হু হু করে লোকালয়ে ঢুকছে। নিচু এলাকা ও গ্রামীণ রাস্তাগুলো তলিয়ে গেছে। তোরাবগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা কামাল হোসেন বলেন, “প্রতিবার জোয়ারে একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। এবারও ঘরে পানি ঢুকেছে। রান্না-বান্না বন্ধ। গরু-বাছুর নিয়ে চিন্তায় আছি। মাঠের আমনের চারা ডুবে গেছে।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকার মেঘনা নদীর তীররক্ষা বাঁধ নির্মাণে ৩ হাজার ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও প্রকল্পের কাজ খুবই ধীরগতিতে চলছে। গত বছরের ৫ আগস্টের পর সরকারের রদবদলের পর থেকে কয়েক কিলোমিটার এলাকায় এখনও কাজ শুরু হয়নি। ফলে নদীভাঙন ও প্লাবনের ভয়াবহতা আরও বেড়েছে।
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ উজ জামান খান বলেন, “আগে মানুষ এত পানি দেখেনি। চলমান প্রকল্পে ধীরগতির জন্য ঠিকাদারদের আটটি কাজ বাতিল করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এসব কাজের নতুন দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।”
স্থানীয়রা দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন। তাদের আশঙ্কা, বর্ষা ও পূর্ণিমার প্রভাবে সামনে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে। তারা বলছেন, দ্রুত বাঁধের কাজ শেষ না হলে প্লাবন ও নদীভাঙনে পুরো এলাকা বাসযোগ্যতা হারাবে।