নবধারা ডেস্ক
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা জনাব সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, আমরা মেইনস্ট্রিমের সাথে মিশে যেতে চাই এবং দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নতিতে শরিক হতে চাই। তিনি বলেন, জাতিবৈচিত্র্য আমাদের সংস্কৃতির উৎস ও শক্তি। বিভিন্ন ভাষা, জাতি ও সম্প্রদায়ের সংহতিতে গড়ে উঠেছে বাংলাদেশের বর্ণিল সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। এই জাতিবৈচিত্র্য দিবস জাতিগত সম্প্রীতি ও ঐক্যকে সুসংহত করার এক অনন্য সুযোগের দ্বার উন্মোচন করলো।
গতকাল রাতে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে “জাতিবৈচিত্র্য দিবস ২০২৫” শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা এসব কথা বলেন।
বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে জাতিবৈচিত্র্য গোষ্ঠীর ছাত্রছাত্রীদের প্রযুক্তি জ্ঞাননির্ভর গুণগত শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কোয়ালিটি এডুকেশন নিশ্চিত করাকে তিনি তাঁর প্রথম কাজ হিসেবে উল্লেখ করেন। ভাষাগত বৈচিত্র্য ও পাঠ্যবইয়ের সীমাবদ্ধতার কারণে মাতৃভাষাভিত্তিক শিক্ষা এখনও সীমিত পরিসরে চলছে, যা উন্নয়নের জন্য অধিকতর বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে বলে জানান উপদেষ্টা।
পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা আরও বলেন, পাহাড়ি ছাত্রছাত্রীরা বিজ্ঞান, গণিত, আইসিটি ও ইংরেজিতে দুর্বল। তাই এই বিষয়গুলোর উপর দক্ষ শিক্ষক দ্বারা তাদেরকে দক্ষ করে গড়ে তোলা হবে। তিনি জানান, আগামী ছয় মাসের মধ্যে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ঘোষণা অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্তত ১০০টি স্কুলে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে ই-লার্নিং চালু করা হবে। এই উদ্যোগ শিক্ষায় প্রযুক্তির বিপ্লব ঘটাবে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ক্লাস করতে পারবে এবং শহরের অভিজ্ঞ শিক্ষকরা পাঠদান করে মানসাম্য রক্ষা করতে পারবেন। এতে পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ হয়ে উঠবে, যা উচ্চশিক্ষা ও কর্মজীবনে সহায়ক হবে বলে মন্তব্য করেন উপদেষ্টা।
উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা আরও জানান, তাঁর প্রথম এজেন্ডা হলো গুণগত শিক্ষা, দ্বিতীয় এজেন্ডা লাইভলিহুড ডেভেলপমেন্ট এবং তৃতীয় এজেন্ডা পরিবেশ, যার দায়িত্ব থাকবে পরিবেশ বিষয়ক উপদেষ্টার হাতে।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল বক্তা ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কে. এস. মং। আলোচনায় অংশ নেন মানবাধিকার ও সংস্কৃতি কর্মী অলিক মৃ, ঢাকা মহানগরের রাখাইন বুড্ডিস্ট ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সভাপতি ক্য চিন ঠে ডলি রাখাইন এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব চ নু মং। সেমিনারে সরকারের সচিব, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিশিষ্ট গবেষক, লেখক ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। আলোচনায় প্রাধান্য পায় বাংলাদেশের জাতিগোষ্ঠীগুলোর ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং উন্নয়ন বিষয়।
সেমিনার শেষে শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন মাননীয় উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমাসহ আগত অতিথিরা। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনে ছোট ছোট তাঁবুতে ঘেরা আলাদা আলাদা স্টলে নিজস্ব জাতিগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়, যা জাতিগত বন্ধন ও পারস্পরিক সম্মিলনের বার্তা বহন করে। গণমাধ্যম কর্মী, গবেষক এবং সংস্কৃতিপ্রেমী উপস্থিত ব্যক্তিদের সক্রিয় অংশগ্রহণে সেমিনারটি ছিল প্রাণবন্ত ও তথ্যসমৃদ্ধ।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.