নিজস্ব প্রতিবেদক
পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান জেলায় মাসব্যাপী উদযাপিত হয়েছে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ, জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও তারুণ্যের উৎসব-২০২৫’। তরুণ প্রজন্মের মাঝে ঐতিহাসিক চেতনা জাগ্রত করা, পার্বত্য অঞ্চলের সংস্কৃতি তুলে ধরা এবং ক্রীড়া ও সামাজিক সম্প্রীতির মাধ্যমে যুব সমাজকে সম্পৃক্ত করাই ছিল এই উৎসবের মূল লক্ষ্য।
উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ছিল প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্ট, যা জুলাই মাসজুড়ে তিনটি জেলাতেই অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি জেলার বিভিন্ন যুব দল অংশগ্রহণ করে, যার ফলে স্থানীয় তরুণদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ ও আনন্দের সঞ্চার ঘটে। ক্রীড়ার এই আয়োজন শুধুমাত্র প্রতিযোগিতার সীমায় আবদ্ধ ছিল না, বরং এটি পরিণত হয় এক প্রাণবন্ত সামাজিক মিলনমেলায়।
উৎসব উপলক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত (অব.) সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল বাঙালির আত্মপরিচয়, ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্রের সংগ্রামের মাইলফলক। শহিদদের আত্মত্যাগ জাতির জন্য চিরন্তন প্রেরণা হয়ে থাকবে।” তিনি পার্বত্য তিন জেলায় আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান এই মহতী উদ্যোগ নেওয়ার জন্য।
টুর্নামেন্টের ফাইনাল পর্বে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদার, বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই এবং খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা নিজ নিজ জেলার তরুণদের উৎসাহিত করতে মাঠে থেকে সম্পূর্ণ আয়োজনের সাথেই যুক্ত ছিলেন।
এই উৎসবে স্থানীয় প্রশাসন, নিরাপত্তা বাহিনী এবং বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের অংশগ্রহণও ছিল চোখে পড়ার মতো। রিজিয়ন কমান্ডার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উৎসবের বিভিন্ন পর্বে অংশগ্রহণ করেন, যা পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি, উন্নয়ন ও সম্প্রীতির প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
তিন জেলার প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষ মাঠে উপস্থিত থেকে এ উৎসব উপভোগ করেন এবং ক্রীড়াবিদদের উৎসাহ দেন। দর্শকদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ প্রমাণ করে, পার্বত্য জনগণ ক্রীড়া ও সংস্কৃতি নিয়ে কতটা সংবেদনশীল ও ঐক্যবদ্ধ।
‘জুলাই পুনর্জাগরণ, জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও তারুণ্যের উৎসব-২০২৫’ পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং তারুণ্যের শক্তিকে একত্রিত করে একটি সফল ও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আশা করা যায়, এই আয়োজন ভবিষ্যতে পার্বত্য অঞ্চলের শান্তি, সম্প্রীতি ও সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।