এমদাদ খান, মাদারীপুর প্রতিনিধি
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুর অংশের ৪৭ কিলোমিটার সড়কজুড়ে বড় বড় গর্ত ও পিচ উঠে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার যানবাহন চলাচলকারী এই মহাসড়ক এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। এতে করে বাড়ছে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির আশঙ্কা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে মাদারীপুরের কালকিনির ভুরঘাটা পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে পিচ উঠে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যানবাহনগুলো হেলেদুলে চলতে বাধ্য হচ্ছে। বিশেষ করে ভুরঘাটা, মোস্তফাপুর, ঘটকচর, রাজৈর, টেকেরহাট, দিকনগর, বরইতলা, বাবনাতলা, ভাঙ্গাসহ প্রায় প্রতিটি স্থানে রাস্তার অবস্থা ভয়াবহ। যাত্রী, চালক ও পথচারীরা রয়েছেন আতঙ্কে।
সড়ক ও জনপদ বিভাগ জানিয়েছে, আপাতত নিজস্ব অর্থায়নে ইট, সুরকি ও বালু দিয়ে কিছু ঝুঁকিপূর্ণ স্থান সাময়িকভাবে মেরামত করা হয়েছে। তবে বর্ষার কারণে তা টিকছে না। মাদারীপুর সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার নাজমুল হাসান জানান, টেকসই সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ মন্ত্রণালয়ে চাওয়া হয়েছে, যা অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্রতিবছর সড়ক সংস্কারে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় হলেও টেকসই কাজ হচ্ছে না। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কারণেই দ্রুত সড়কের এমন বেহাল দশা তৈরি হয়েছে।
সম্প্রতি বরইতলা এলাকায় একটি যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে চালক নিহত হন এবং আহত হন অন্তত ১৫ জন। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তির আশঙ্কায় যাত্রীদের মধ্যে চরম উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
বাসযাত্রী দুলাল শিকদার বলেন, “এই রাস্তায় বাসে উঠলেই মাথা ব্যথা শুরু হয়। অসুস্থ হয়ে পড়ি। এত বড় বড় গর্ত! কবে এর থেকে মুক্তি পাবো জানি না।”
চাকরিজীবী ইসরাত জাহান টুম্পা বলেন, “মাদারীপুর অংশে ঢুকলেই আতঙ্ক লাগে। দেরিতে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়, দুর্ঘটনার ভয় তো আছেই।”
গাড়িচালকরা বলছেন, এই সড়কে প্রতিদিন গাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে, ভয় পাচ্ছেন গাড়ি চালাতে।
সড়ক বিভাগ জানিয়েছে, ভবিষ্যতে সড়কটিকে ছয় লেনে উন্নীত করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, যাতে যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারেন।