শাকিল মাহমুদ বাচ্চু, উজিরপুর (বরিশাল)
বরিশাল-ঢাকা ব্যস্ততম মহাসড়কে প্রতিমিনিটেই যাতায়াত করে অসংখ্য যানবাহন। তবে উজিরপুর জয়শ্রী বাসস্ট্যান্ড থেকে গৌরনদী ভুরঘাটা পর্যন্ত প্রায় ২৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়ক এখন যেন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা, বাড়ছে পথচারী ও যাত্রীদের প্রাণহানির ঝুঁকি।
সরেজমিনে শুক্রবার (১ আগস্ট) দেখা গেছে, সড়কের অধিকাংশ স্থানে বড় গর্ত, ভাঙা কার্পেটিং ও কোথাও কোথাও দেবে যাওয়া অংশ। খানাখন্দে ভরা রাস্তার চিত্র সবচেয়ে ভয়াবহ গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। কোথাও কোথাও বৃষ্টির পানি জমে থাকায় গর্ত চোখে না পড়ায় প্রতিনিয়ত ছোট যানবাহন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা রাজিব সরদার বলেন, “প্রায় ৪৮ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক সংস্কারের কাজ শেষ হতে না হতেই আবারও সড়ক খানাখন্দে ভরে গেছে। এই দুরবস্থার মূল কারণ অনিয়ম ও দুর্নীতি।”
জানা যায়, বরিশাল সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের আওতায় ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সড়কটির দুই পাশ ছয় ফুট সম্প্রসারণে প্রায় ৪৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয় এমএম বিল্ডার্সের মাধ্যমে। প্রকল্পটি শেষ হয় ২০১৮ সালের জুনে। এরপর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ফের প্রায় ৪৮ কোটি টাকার আরেকটি সংস্কার প্রকল্প পায় মাহফুজ খান লিমিটেড নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
তবে এসব উন্নয়ন কাজের সুফল পাচ্ছে না জনগণ। বরং রাস্তায় ঝুঁকিপূর্ণ চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
লোকাল বাসচালক সাদ্দাম হোসেন জানান, “ভুরঘাটা থেকে জয়শ্রী পর্যন্ত রাস্তা এখন মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও দুর্ঘটনা ঘটছে।”
গ্রিন লাইন পরিবহনের চালক আনোয়ার শিকদার অভিযোগ করে বলেন, “নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়ক সংস্কারের ফলে এত দ্রুত খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। দুর্নীতির কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি।”
ঢাকা-বরিশাল রুটে মালামাল পরিবহনকারী কাভার্ড ভ্যানচালক বাবু ফকির বলেন, “এই রাস্তায় প্রতিদিন চলাচল করি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। কখন যে প্রাণটা চলে যায় বুঝতে পারি না।”
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এক প্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “অতিবৃষ্টির কারণেই সড়কে এমন দুরবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।”
এ বিষয়ে বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, “চলমান সংস্কার কাজ আমরা নিয়মিত করছি। চারটি গ্রুপ প্রতিদিন কাজ করছে। তবে বর্ষাকালের কারণে গর্ত ও খানাখন্দের সমস্যা বাড়ছে। মৌসুম শেষ হলে পূর্ণ সংস্কারকাজ শুরু হবে।”
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.