আমিনুল ইসলাম, দুর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধি
রাজশাহীর দুর্গাপুর পৌরসভার সিংগা বাজার থেকে চৌবাড়িয়া হয়ে হোজা পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সড়কের বেহাল দশায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন অন্তত ২০ হাজার মানুষ। সড়কজুড়ে খানাখন্দ আর জমে থাকা পানিতে রীতিমতো যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। সংস্কারের দাবিতে বারবার তাগাদা দিলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সিংগা থেকে হোজা পর্যন্ত সড়কের বেশিরভাগ অংশে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। গর্তগুলোতে জমে আছে বৃষ্টির পানি, যার ফলে পথচারীদের নেমে হেঁটে চলতে হচ্ছে। ভ্যানচালক থেকে শুরু করে কৃষক, শিক্ষার্থীসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ এই দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
স্থানীয় কলেজ শিক্ষার্থী নবী বলেন, “এই সড়ক দিয়ে কলেজ ও বাজারে যেতে খুব সমস্যা হয়। গত দুই বছর ধরে সড়কটি এতটাই খারাপ যে হাঁটাও যায় না।”
মাড়িয়া গ্রামের কৃষক আহসান আলী বলেন, “আমরা ফসল নিয়ে দুর্গাপুর বাজারে যেতাম। এখন এই রাস্তা দিয়ে যাওয়া অসম্ভব। অন্য রাস্তা ঘুরে যেতে হচ্ছে।”
ভ্যানচালক ফরহাদ হোসেন জানান, “সাত বছর ধরে এই রাস্তায় ভ্যান চালিয়ে কষ্ট পাচ্ছি। প্রতিদিন ভ্যান নষ্ট হয়। এখন অনেকে আর এই রাস্তায় ভ্যান চালাতে চায় না।”
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, আট বছর আগে নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে রাস্তার পাকাকরণ করা হয়। দুই-তিন বছরের মধ্যেই রাস্তার ভাঙন শুরু হয়। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। কয়েকবার মাপজোক হলেও বাস্তবে কাজ হয়নি।
ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাবও রাস্তার অবনতির একটি বড় কারণ হিসেবে উঠে এসেছে। বহরমপুর গ্রামের তানজিল খাঁ বলেন, “ড্রেন না থাকায় বাড়ির পানি ও বৃষ্টির পানি রাস্তায় জমে রাস্তা ভেঙে গেছে।”
চৌবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা ওয়াইজুল বলেন, “হাটবারে কৃষকদের সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয়। রাস্তায় গাড়ি চলে না, হেঁটেও যাওয়া যায় না।”
এ বিষয়ে দুর্গাপুর পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী সাহাবুল হক বলেন, “বর্তমানে কোনো বরাদ্দ নেই। তবে নতুন করে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।”
উপজেলা প্রকৌশলী মাসুক-ই-মোহাম্মাদ জানান, “সড়কটি সম্প্রতি পরিদর্শন করেছি। খুবই খারাপ অবস্থা। সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জানানো হয়েছে।”
স্থানীয়রা দ্রুত সড়কটি সংস্কারের দাবি জানিয়ে বলেছেন, এবারও সংস্কার না হলে আগামী বর্ষায় রাস্তার আর কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।