নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মুশুলী ইউনিয়নের তারেরঘাট এলাকায় পাথর মহাল বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সারমিনা সাত্তারের প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন পাথর শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা।
গত ২৩ জুলাই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না থাকায় পরিচালিত এক ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ২৯টি পাথর ভাঙার মেশিন সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয় উপজেলা প্রশাসন। এ সময় এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয় এবং বিপুল পরিমাণ পাথর ও যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়।
এই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে এলাকাজুড়ে শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, তারা দীর্ঘদিন ধরেই নিয়ম মেনে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। অথচ কোনো প্রকার সময় না দিয়েই মালামাল জব্দ করে তা নিলামে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পাথর ব্যবসায়ী রায়হান আহমেদ বলেন, “আমরা জরিমানার টাকা পরিশোধ করেছি, পরিবেশ ছাড়পত্রের জন্য আবেদনও করেছি। অথচ প্রশাসন সময় না দিয়ে আমাদের মালামাল জব্দ করে দিয়েছে এবং নিলামে তুলেছে—এটা চরম অন্যায়।”
জানা গেছে, ২৭ জুলাই তিনটি জাতীয় দৈনিকে জব্দকৃত মালামাল নিলামের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়, যা নিয়ে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের মধ্যে চরম উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
বৃদ্ধ শ্রমিক সোলেমান মিয়া বলেন, “এই বয়সে আর কোথায় যাব? পাথর না ভাঙলে খাব কী?” মহিলা শ্রমিক রেহেনা বেগম বলেন, “প্রতিদিনের মজুরি দিয়ে সংসার চলে। কাজ বন্ধ থাকায় এখন না খেয়ে মরার দশা।”
পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব আইয়ুব আলী খান অভিযোগ করে বলেন, “ইউএনও দুই দিনের সময় চেয়ে আবার আমাদের পাথর নিলামে দিয়েছে। আমরা তার প্রত্যাহার চাই। আজকের মধ্যে ব্যবসা চালু না হলে আগামীকাল থেকে সড়ক অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।”
এদিকে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর কাজী শামসুদ্দীন জানান, ব্যবসায়ীরা হাইকোর্টে রিট করেছেন এবং তাদের মালিকানার বৈধ কাগজ রয়েছে। তাই প্রশাসনের উচিত পাথর ফেরত দিয়ে ব্যবসার সুযোগ করে দেওয়া।
তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সারমিনা সাত্তার বলেন, “পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া যন্ত্রচালিত কার্যক্রম অবৈধ। তবে হাত দিয়ে পাথর ভাঙা বা লোড-আনলোড বন্ধ করা হয়নি। নিয়মের মধ্যে থেকেই সবাইকে কাজের সুযোগ দেওয়া হবে।”