মো. আলী আহসান রাজ, ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ নগরীর ব্রাহ্মপল্লী রোডে অবস্থিত হেলথ কেয়ার প্রাইভেট হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা ও অবহেলার কারণে গর্ভের শিশু মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। ঘটনার জেরে প্রতিষ্ঠানটিকে সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন এবং তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট ২০২৫) দুপুরে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. সাইফুল ইসলাম খান স্বাক্ষরিত এক নোটিশে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সিভিল সার্জন জানান, “প্রতিষ্ঠানটির নথিপত্র যাচাই করে দেখা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের লাইসেন্স থাকলেও অন্যান্য নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে হাসপাতালটি পরিচালিত হচ্ছিল, যা প্রাইভেট হাসপাতাল পরিচালনা নীতিমালার পরিপন্থি। শিশুমৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং তদন্ত প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত হাসপাতালটি বন্ধ থাকবে।”
তবে তদন্ত কমিটির সদস্যদের নাম তাৎক্ষণিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি।
এর আগে ৩ আগস্ট সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হেলথ কেয়ার হাসপাতালে গর্ভের শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। জানা যায়, জামালপুর থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা এক গর্ভবতী নারীকে হাসপাতালের বাইরে থাকা দালাল মো. হান্নান ফুসলিয়ে হেলথ কেয়ারে নিয়ে আসে।
সেসময় হাসপাতালে কোনো চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন না। প্রায় আড়াই ঘণ্টা অপেক্ষার পর রোগীটি অন্যত্র চলে যেতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লিফট বন্ধ করে দেয়। রোগী সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে পড়ে যান এবং মারাত্মক রক্তক্ষরণে তাঁর গর্ভে থাকা শিশুটির মৃত্যু হয়।
ঘটনার পর কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ হাসপাতালের অংশীদার রঞ্জন দে, মো. পাপ্পু এবং ম্যানেজার মো. মজিবুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে।
ওসি মো. শিবিরুল ইসলাম বলেন, “হাসপাতালে মারাত্মক অব্যবস্থাপনার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তবে এখনো ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
গর্ভবতী নারীর স্বামী ও পুলিশের এসআই লুৎফর হোসেন সাংবাদিকদের ফোন কল এড়িয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে সরেজমিনে হেলথ কেয়ার হাসপাতালে গিয়ে কর্তৃপক্ষের কারো সঙ্গেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।