যশোর প্রতিনিধি
যশোরের কেশবপুরে অতিবৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আমন ধানের মৌসুমের শুরুতেই ৪২০ হেক্টর জমিতে লাগানো বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে।
জানা গেছে, উপজেলায় আমন ধানের চাষের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো ৯ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমি। আমন ধানের আবাদের জন্য ইতিমধ্যে বীজতলা তৈরী করেছিল সাড়ে ৫শ’ হেক্টর জমিতে।
গত জুলাই মাসের শুরুতে দুই দফা অতি বৃষ্টিপাতের কারণে কেশবপুর পৌর সভাসহ উপজেলার সকল বিল খাল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় আমন ধানের চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে দেখা গেছে যে সমস্ত বিলে আউশ, আমন ও বোরোধান মৌসুমে ধানের আবাদ হয়ে থাকে ওই সকল বিল বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হয়ে পানি থৈ থৈ করছে। আগামীতে আরো প্রবল বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। বিলের পানিতে কোনো শ্রোত নেই। যার কারণে শুধু আমন ধানের চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েনি, আগামীতে বোরোধান মৌসুমে বোরোর আবাদ অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে।
উপজেলার কালিয়ারই গ্রামের কৃষক অশোক দত্ত বলেন, অতিবৃষ্টি পাতের কারণে বিলের নিন্ম অঞ্চল প্লাবিত হয়ে গেছে। তাছাড়া উঁচু জমিতে উঠতি আউশধানের জমিও তলিয়ে গেছে। আমন ধানের চাষের জন্যে যে বীজতলা তৈরী করা হয়েছিলো তা-ও বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। পাঁচ হাজার হেক্টরের জমিতে ধান হবে না।
মজিদপুর ইউনিয়নের বাগদহ গ্রামের কৃষক খলিল মন্ডল বলেন, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে উঠতি আউশ ধানের খেত তলিয়ে গেছে। বিলের মধ্যে এতো বেশি পানিবদ্ধ হয়েছে যে আউশধান চাষতো দুরে থাক আগামী দিনগুলোতে বোরোধান মৌসুমে ধানের আবাদ অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে।
বাগদাহ মজিদপুর গ্রামের কৃষক তসির উদ্দিন খান বলেন, তার বিলের মধ্যে প্রায় ৪ বিঘা জমির পাটের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। পাট কেটে আমন ধানের চাষ করে থাকি। তারপর বোরোধান মৌসুমে বোরোধান আবাদ করে থাকি। কিন্তু এবছর এতো পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে বিলের জমিতে বোরোধান মৌসুমে বোরোধান আবাদ অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে। পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেওয়া না হলে বিল এলাকার হাজার হাজার কৃষকের জীবনে নেমে আসবে অবর্ণনীয় দূর্ভোগ।
আঠন্ডা গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, তাদের বিল সমুহ প্লাবিত হয়ে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এই বিলে আর কোনো ফসল উৎপাদন করা সম্ভব না। আমাদের পেশা পরিবর্তন করে শহরে গিয়ে রিক্সা চালাতে হবে।
কৃষি অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার রুস্তম আলী বলেন, বিল এলাকার কৃষকের সব আশা শেষ হয়ে গেছে। বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হয়ে বিল সমুহ স্থানীয় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এই বিলে ফসলের আবাদের আর কোনো সুযোগ নেই। পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান হচ্ছে না। ইতোমধ্যে এলাকার অনেক কৃষক তাদের পেশা বদল করে শহরে রিক্সা চালাচ্ছেন ।