জালালুর রহমান,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার পূর্বজুড়ী ইউনিয়নের দক্ষিণ বড়ধামাই গ্রামে প্রবাসী তিন ভাইয়ের জমি দখল ও আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে তাদের বড় ভাই মাসুক উদ্দিন (আসুক) এর বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্প্রতি চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, গ্রামের মৃত হাজী মো. ছওয়াব আলী মিয়ার ছেলে কাতার প্রবাসী ফখরুল ইসলামের পক্ষে ও বড় ছেলে মাসুক উদ্দিন আসুকের বিরুদ্ধে গত ২৫ মে সংবাদ সম্মেলন করে বিচার দাবি করেন তাদের মা, মরহুমা হাজী ছইফুল বিবি।
প্রায় ২০ বছর আগে জমিটি জরিপ করে দেখা যায়, প্রাপ্ত জমি ঘোষিত মালিকানার তুলনায় ১৯ শতক কম। এ বিষয়ে একাধিকবার জরিপও করা হয়। জমির দক্ষিণে রয়েছে মরহুম হাজী মো. ফরিজ আলীর টিলা জমি।
মাসুক উদ্দিন আসুক দীর্ঘ ১৮-২০ বছর ধরে পুরো জমি একাই ভোগ করে আসছেন। তিনি ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। পরে ফখরুল ইসলাম এসব মামলায় আদালতের রায়ে মুক্ত হন। বিষয়টি পারিবারিকভাবে আলোচনার মাধ্যমে মীমাংসা করতে গিয়ে আসুককে তার বর্তমান বাড়ির জায়গাটি ৩ লাখ টাকা দিয়ে কিনে দেওয়া হয়।
ফ্রান্স প্রবাসী নজরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, বাবা-মা মারা যাওয়ার পর থেকেই আসুক পুরাতন বসতবাড়ির জমি নিজের দখলে নেওয়ার নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেন। প্রবাসী ভাইয়েরা দেশে ফিরে একসঙ্গে জমি জরিপ করে সবার অংশ বুঝে নেবে বলে সিদ্ধান্ত হলেও, পরে আসুক তা মানেননি।
ফখরুল আবার প্রবাসে চলে যাওয়ার পর, আসুক পুনরায় ওই জমি নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র করতে থাকেন।
সবশেষ ১০ আগস্ট নজরুল ইসলাম পুরাতন ঘর সংস্কারের জন্য ৩ লাখ টাকার ইট, বালু, সিমেন্ট আনলে আসুক বাধা দেন। দক্ষিণ পাশের টিলার জমি এবং বাড়ির আশপাশের জায়গা নিয়েও তিনি আপত্তি তোলেন। এমনকি ১১ আগস্ট ধান রোপণের সময় শ্রমিকদের কাজ বন্ধ করিয়ে দেন এবং হুমকি দেন। এতে নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় বৃষ্টির পানিতে মালামাল নষ্ট হচ্ছে।
নজরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, আসুক নিয়মিতভাবে বাড়ির অন্য সদস্যদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। বাড়িতে কোনো পুরুষ সদস্য না থাকায় পরিবারটি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
একপর্যায়ে আসুক বিভিন্ন ফলজ গাছ বিক্রি করতে গেলে স্থানীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যান বিষয়টি নিয়ে বলেন, দেশে ফিরে আসা প্রবাসী ভাইদের সঙ্গে জমি ভাগাভাগির পর যে যা প্রাপ্য, তা বুঝিয়ে দেওয়া হবে। মরহুম ফরিজ আলীর জমি জরিপের মাধ্যমে যার প্রাপ্য, তাকে ফিরিয়ে দেওয়ার কথাও বলেন তারা। তবে অভিযোগ রয়েছে, আসুক এখনো জমি দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
নজরুল ইসলাম প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।