মো. শাফায়েত হোসেন, বান্দরবান
সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও তাতে খুব একটা পরিবর্তন আসেনি নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। জনবল ঘাটতির পাশাপাশি চিকিৎসক-নার্সদের অনুপস্থিতি, ঔষুধ সংকট ও অব্যবস্থাপনায় দিন দিন ভেঙে পড়ছে এ সীমান্ত উপজেলার স্বাস্থ্যসেবা।
কাগজে-কলমে ৫০ শয্যার হলেও ৩১ শয্যার জনবলও নেই এই হাসপাতালে। ১৩ জন চিকিৎসকের মধ্যে বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র ৪ জন, তার মধ্যেও দুইজন নিয়মিত থাকেন না। এক জন প্রেষণে আছেন জেলা সদরে, আরেকজন কর্মরত বাইশারী সাব-সেন্টারে। ফলে হাসপাতালে চিকিৎসা দিচ্ছেন মাত্র দুইজন চিকিৎসক। এ ছাড়া ২৩টি নার্সিং পদের মধ্যে কর্মরত আছেন মাত্র ৭ জন।
হাসপাতালে গেলে দেখা যায়, দুপুর গড়ালেও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবুল মনজুর ছিলেন অনুপস্থিত। টিকিট কাউন্টারে ভিড় জমিয়েছেন শত শত রোগী। অনেকেই শিশু-কিশোর নিয়ে দীর্ঘক্ষণ বসে ছিলেন চিকিৎসকের অপেক্ষায়। তবে প্রেসক্রিপশন পেলেও বেশিরভাগ রোগীকেই বাইরে থেকে ঔষুধ কিনতে বলা হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, হাসপাতালের শৌচাগার, ওয়ার্ড ও সিঁড়ি দীর্ঘদিন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়নি। শয্যার চাদর নেই, পুরনো বেড থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ফলে নানাভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগীরা।
এ প্রসঙ্গে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. অমিতা দাশ গুপ্তা চিকিৎসক সংকট স্বীকার করে জানান, সীমিত জনবল নিয়ে সাধ্যমতো সেবা দেয়ার চেষ্টা চলছে। জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ শাহীন হোসাইন চৌধুরী বলেন, “ডাক্তার সংকট শুধু নাইক্ষ্যংছড়িতেই নয়, সারাদেশেই রয়েছে। ডিসেম্বরের আগে নতুন নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত সংকট কাটবে না। দায়িত্বে অবহেলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
স্থানীয় সচেতন মহলের অভিযোগ, দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে থেকে কর্মকর্তারা প্রভাব-প্রতিপত্তি ব্যবহার করে অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছেন। তদারকির অভাব ও দায়িত্বে গাফিলতির কারণেই এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে সীমান্ত অঞ্চলের লাখো মানুষের একমাত্র চিকিৎসা ভরসাস্থলটি পুরোপুরি অচল হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।