
গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ওসমানপাড়া গ্রামে বাসর ঘরে এক নববধূর (১৮) ওপর ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণের’ অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তার স্বামী আসিফ মিয়াকে আটক করে কারাগারে পাঠানো হলেও, সন্দেহভাজন আরও ছয়জনকে আটকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। এই ঘটনা এলাকায় তীব্র আলোচনা ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
গত ২৭ আগস্ট আসিফ মিয়ার সঙ্গে ওই তরুণীর বিয়ে হয়। পরদিন, অর্থাৎ ২৮ আগস্ট রাতে বাসর ঘরেই তিনি যৌন নির্যাতন ও শারীরিক নিপীড়নের শিকার হন বলে অভিযোগ করেন। ২৯ আগস্ট গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাকে প্রথমে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে অবস্থার অবনতি হলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার শরীরে যৌন নিপীড়ন ও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
ঘটনার পরপরই স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ স্বামী আসিফসহ সাতজনকে আটক করে। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে, পরদিনই আসিফ ছাড়া বাকি ছয়জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। শুধু স্বামীকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
সাঘাটা থানার একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, “তদন্তে অন্যদের সম্পৃক্ততার কোনো প্রমাণ মেলেনি।” তবে, নববধূর অভিযোগে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ’-এর কথা উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও কেন দ্রুত তাদের ছেড়ে দেওয়া হলো, সে বিষয়ে তারা স্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।
গাইবান্ধা জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রফিকুল ইসলাম বলেন, “একজন স্বামীও যদি স্ত্রীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন, তবে তা ধর্ষণ হিসেবে গণ্য হতে পারে। তবে যেহেতু এখানে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণের’ অভিযোগ করা হয়েছে, তাই অন্যদের দ্রুত মুক্তি দেওয়া আইনি প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।”
স্থানীয় বাসিন্দারাও পুলিশের এই পদক্ষেপকে রহস্যজনক বলছেন। তাদের অভিযোগ, কোনো প্রভাবশালী মহলের চাপে হয়তো মামলার গুরুত্বপূর্ণ অংশ আড়াল করার চেষ্টা চলছে। ওসমানপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম জানান, তারা শুনেছেন বাসর ঘরে বেশ কয়েকজন মিলে ওই তরুণীকে নির্যাতন করেছে।
এ বিষয়ে সাঘাটা থানার উপপরিদর্শক আমিনুল ইসলাম বলেন, “স্বামীকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের ব্যাপারে এখনো কোনো প্রমাণ মেলেনি। তদন্ত চলছে এবং তদন্তে যাদের নাম আসবে, তাদের বিরুদ্ধেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তবে, বাসর ঘরের মতো সংবেদনশীল ঘটনায় ভুক্তভোগীর অভিযোগে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণের’ কথা বলা সত্ত্বেও তদন্ত শুরুর আগেই ছয়জনকে ছেড়ে দেওয়ায়, এই মামলার নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে জনমনে গভীর সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.