আশরাফুজ্জামান সরকার, পলাশবাড়ী, (গাইবান্ধা)প্রতিনিধি
ঘটনাটি ঘটেছে গাইবান্ধার সদর উপজেলার তুলসীঘাট নামক স্থানে। জানা যায়, এক প্রবাসীর ক্রয় সূত্রে জমির উপর নির্মাণ করা ঘরবাড়ী জোরপূর্বক দখল করার চেষ্টা করছে একটি মহল। দখলদার মহলটি স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় এবং আইন আদালতের তোয়াক্কা না করায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলার ও প্রতিবাদ করার সাহস না পাওয়ায় যখন তখন ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।
মঙ্গলবার ৩০ সেপ্টেম্বর বিকেলে সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা যায়, গাইবান্ধার সাহাপাড়া ইউনিয়নের তুলসীঘাট গ্রামের এক প্রবাসীর জায়গা জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা করে যাচ্ছে একটি চক্র। ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন আইনের দ্বারস্থ হয়েও মিলছে না প্রতিকার। চরম আতঙ্কে ভুগছেন প্রবাসীও তার পরিবারের সদস্যরা।
উপজেলা ও ইউনিয়ন ভুমি অফিসের কাগজ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গাইবান্ধার সাহাপাড়া ইউনিয়নের পীরগাছা মৌজার জে.এল নং ৫০, বি এস খতিয়ান নং ৯২ দাগ নং ১৩০,জমির পরিমাণ ১১ শতাংশ। ভূমিটির বর্তমান ক্রয় সূত্রে মালিক তুলশীঘাট গ্রামের মৃত তছলিম উদ্দিন সরকারের ছেলে মাজেদ সরকার (প্রবাসী)। তিনি বিগত ২০২৩ ইং সালের এপ্রিল মাসে উক্ত জমির পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া প্রকৃত মালিক মৃত সরাফুজ্জামানের (মরহুম সাবেক সেনা সদস্য) মেয়ে সুমি, সীমা খাতুনের কাছ থেকে ক্রয় করেন। এরপর থেকে উক্ত জায়গাটি ভোগ দখল করে আসছেন তিনি। জমিটি ক্রয় করার পর থেকেই স্থানীয় সাইদুর রহমান গং অহেতুক ঈর্ষান্বিত হয়ে জমিটি দখলের পায়তারা করে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রবাসী মাজেদ সরকারের স্ত্রীসহ পূর্বের মালিকগণের (মরহুম সাবেক সেনা সদস্যর স্ত্রী, কন্যা) সাথে প্রতিনিয়ত ঝগড়া বিবাদ এবং জীবন নাশের হুমকি প্রদান করে আসছেন সাইদুর রহমান গং।
যে কারণে মানসিক টেনশন এবং চিন্তা ভাবনার এক পর্যায়ে অসুস্থ হয়ে প্রবাসী মাজেদ সরকারের স্ত্রী বিগত দুমাস আগে স্ট্রোক করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। মৃত্যুর খবরে প্রবাসী মাজেদ সরকার বিশেষ ছুটিতে দেশে আসে এবং ক্রয়কৃত জায়গাটিতে সীমানা নির্ধারণ করে বসতবাড়ী স্থাপনা নির্মাণ করেন। স্থাপনা নির্মাণের পর থেকেই সাইদুর রহমান গংদের দখলদারিত্বের তৎপরতা বেড়ে যায়। সকলের অগোচরে সাইদুর গং রাতের আঁধারে জমিগুলো দখলের অপচেষ্টা এবং প্রবাসী মাজেদ সরকারকে প্রতিনিয়ত জীবন নাশের হুমকি প্রদান করে আসছেন।
এ ব্যাপারে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিগণের সহযোগিতায় বারংবার শালিশি বৈঠক এবং সমঝোতা করার চেষ্টা করার পরেও কোন প্রতিকার মেলেনি প্রবাসী মাজেদ সরকারের।
উক্ত বিষয়ে স্থানীয় হাসান নামের একব্যাক্তি সাংবাদিকদের জানায়, ক্রয় সূত্রে এই জায়গাটির বর্তমান মালিক প্রবাসী মাজেদ সরকার। জায়গার মূল মালিক আমার চাচা সরাফুজ্জামানের মেয়ে সুমি, সীমা খাতুনের কাছ থেকে প্রায় তিন বছর আগে প্রবাসী মাজেদ সরকার ক্রয় করেন এবং ক্রয়কৃত জায়গাটির সীমানা নির্ধারণ করে স্থাপনা নির্মাণ করেন। যা দেখে ঈর্ষান্বিত হয় সাইদুর রহমান গং। সাইদুর রহমান একজন প্রভাবশালী এবং ভূমিদস্যু বটে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় (মহিলা) বাসিন্দা জানান, জমি ক্রয়ের বিষয়টা আমরা অবগত আছি। প্রায় তিন বছর আগে প্রবাসী মাজেদ সরকার সুমি গংদের কাছ থেকে ক্রয় করার পর ভোগদখল করে আসছে। এতেই ঈর্ষান্বিত হয়ে সাইদুর রহমান গং প্রায় সময় প্রবাসীর সাথে ঝগড়া বিবাদ করে আসছে।নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য এরা অন্যের ক্ষতি করতে বা অন্যায়ভাবে কারো জমি দখল করতে দ্বিধা করে না। দলিল না থাকা সত্ত্বেও অবৈধভাবে জোরপূর্বক জমি দখল করার পাঁয়তারা করায় আমি তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবী জানাচ্ছি।
জমির মুল মালিক সুমি গং সাংবাদিকদের জানায়, সাইদুর রহমান আমাদের আপন চাচা হলেও একজন স্বার্থপর, লোভী, হিংসা পরায়ণ এবং অতৃপ্ত আকাঙ্ক্ষা প্রকৃতির মানুষ। তিনি দীর্ঘদিন যাবত আমাদের পরিবারের উপর নানাভাবে নির্যাতন করে আসছে। বর্তমানে আমাদের বিক্রয় করা জমি অবৈধভাবে দখল করার জন্য প্রবাসী মাজেদ সরকারের সাথে অন্যায়ভাবে নানা ধরনের হয়রানি এবং হুমকি ধামকি প্রদান করে আসছে। তার এহেন কর্মকাণ্ড থেকে মুক্তি পেতে আমরা প্রশাসনের জোরালো হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
বর্তমান ক্রয়কৃত জমির মূল মালিক দুবাই প্রবাসী মাজেদ সরকার সাংবাদিকদের জানান, প্রায় তিন বছর যাবত ক্রয়কৃত জমি ভোগ দখল করে আসার পর প্রায় মাস দুয়েক আগে একটি স্থাপনা স্বরূপ টিনসেড ঘর নির্মাণ করি। এরই এক পর্যায়ে সাইদুর রহমান গং জমিটি জোরপূর্বক দখলের পাঁয়তারা ও আমাকে প্রাণনাশের হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে এমনকি স্থানীয় এবং বহিরাগত গুন্ডা পান্ডা দ্বারা জোরপূর্বক আমার নির্মাণাধীন ঘরবাড়ী দখল করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। মালিকানার কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে না পেরেও নিজেকে মালিক দাবী করছেন।
ভুক্তভোগী বলেন, আমি একজন প্রবাসী হিসেবে দেশে রেমিটেন্স পাঠাই, দেশে আমার পরিবার ও সম্পত্তির কোনো নিরাপত্তা নেই। আমি এ ব্যাপারে দেশের প্রধান উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা, গৃহায়ন উপদেষ্টা এবং সকল আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এবিষয়ে গাইবান্ধা সদর থানায় পুনরায় অভিযোগ করার প্রস্তুতি চলছে বলে সাংবাদিকদের জানান প্রবাসী মাজেদ সরকার।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.