মোঃ ইব্রাহীম মিঞা, দিনাজপুর প্রতিনিধি
দিনাজপুরের বিরামপুর প্রথম শ্রেণীর পৌরসভায় পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম আজ চরমভাবে প্রশ্নবিদ্ধ। পৌরসভার প্রাণকেন্দ্র মহাসড়কের পশ্চিম পাশে রাতের আঁধারে ফেলে দেওয়া হয়েছে নারীদের চুলভর্তি প্রায় ২৫ বস্তা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও একাধিক ক্লিনিকসংলগ্ন স্থানে এমন ভাগাড় তৈরি হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ৪নং ওয়ার্ডের কলাবাগান খান সুপার মার্কেটের সামনে গড়ে ওঠা ভাগাড়ের আশপাশেই রয়েছে রাজু ডায়াগনস্টিক, রাইয়ান ক্লিনিক, সেবা ক্লিনিক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। স্বাস্থ্যসেবার মতো সংবেদনশীল স্থানের পাশে চুল ও আবর্জনার স্তূপ জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি ও পরিবেশ দূষণকে মারাত্মকভাবে বাড়িয়ে তুলছে। শহরের অলিগলিতে ছোট-বড় অসংখ্য ময়লার স্তুপ, মাসের পর মাস অচল নালা-নর্দমা, এবং অধিকাংশ ওয়ার্ডে ডাস্টবিন না থাকায় নাগরিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পৌর প্রশাসক পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের পৌর এলাকায় কাজে না লাগিয়ে উপজেলা পরিষদ চত্বরে ব্যবহার করছেন। প্রতিদিন ৪–৬ জন কর্মীকে পৌর এলাকা থেকে সরিয়ে মুক্তমঞ্চ, রাস্তা, বাগান ও পুকুরপাড় সাজসজ্জার কাজে ব্যস্ত রাখা হয়।
পৌর পরিচ্ছন্নতা কর্মী ভোলানাথ সরকার জানান, বিরামপুর পৌরসভায় ২৬ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী আছে। নয়টি ওয়ার্ডে কাজ করার পাশাপাশি উপজেলা পরিষদে প্রতিদিন দুইজন এবং মাঝেমধ্যে অতিরিক্ত ৫–৭ জন দেয়া হয়। উপজেলা পরিষদের ভেতরে ১৫–১৭টি ডাস্টবিন রাখা হলেও শহরের ওয়ার্ডগুলোতে ডাস্টবিনের সুষম বণ্টন নেই।
এ বিষয়ে বিরামপুর পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুজহাত তাসনীম আওন-এর কাছে মহাসড়ক ও ক্লিনিকের সামনে ভাগাড় তৈরির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ময়লা-আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা না থাকলে কোথায় ফেলব? আপনার বাড়ির সামনে ফেলবে নাকি? কোনো না কোনো জায়গায় তো ফেলতেই হবে। তবে মহাসড়ক ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের সামনে ভাগাড় তৈরিকে তিনি সঠিক পদক্ষেপ হিসেবে ব্যাখ্যা করতে পারেননি।
ডাস্টবিনের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকায় পৌরবাসী ময়লা সরাসরি ড্রেনে ফেলছেন। এতে পানি চলাচল বন্ধ হয়ে ড্রেন মাসের পর মাস আটকে থাকছে। সম্প্রতি বিরামপুর মহিলা কলেজের আশেপাশেও ময়লার স্তুপ দেখা গেছে। অথচ উপজেলা পরিষদে ১০০ গজের মধ্যে চারটি ডাস্টবিন বসানো আছে—কোয়ার্টারের সামনে, পুকুরপাড়ে, গ্যারেজে এবং তৃতীয় তলার ছাদের ওপরও ডাস্টবিন রাখা হয়েছে। এতে সাধারণ নাগরিকদের মনে ক্ষোভ আরও বেড়েছে।
জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে, পৌরবাসী অভিযোগ করেন, দিনাজপুর জেলার বর্তমান জেলা প্রশাসক যেখানে সর্বত্র পরিচ্ছন্নতা ও নাগরিক সেবার প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছেন, সেখানে প্রথম শ্রেণীর বিরামপুর পৌরসভায় এ ধরনের পরিস্থিতি অগ্রহণযোগ্য। এ কারণে তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি জেলা প্রশাসকের সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.