Nabadhara
ঢাকাশুক্রবার , ৩ অক্টোবর ২০২৫
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ইতিহাস
  5. কৃষি
  6. খুলনা বিভাগ
  7. খেলাধুলা
  8. চট্টগ্রাম বিভাগ
  9. জাতীয়
  10. জেলার সংবাদ
  11. ঢাকা বিভাগ
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. ধর্ম
  14. প্রধান সংবাদ
  15. ফিচার
আজকের সর্বশেষ সবখবর

গোয়ালন্দে আগুনে পুড়ে ছাই অসহায় সাবানার সুখ স্বপ্ন

 শামীম শেখ, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
অক্টোবর ৩, ২০২৫ ৩:২৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

শামীম শেখ, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি

ভয়াবহ আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে অসহায় সাবানার  (৩৩)সুখ স্বপ্ন। বাবা-মা ও স্বামী হারা সাবানা আশা করেছিলেন সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র ছেড়ে একদিন  এক টুকরো জমি কিনে সেখানে বাড়ি করবেন। একমাত্র ছেলে স্বাদীনকে (১৭) বিদেশ পাঠিয়ে সুপ্রতিষ্ঠিত করবেন। একটু সুখের নাগাল পাবেন। এ জন্য তিল তিল করে জমিয়েছিলেন ৩ লক্ষাধিক টাকা। কিন্তু আগুনে তার জমানো সব টাকা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। পুড়ে গেছে তার সুখের নাগাল পাওয়ার স্বপ্ন।

গত  ৩০ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে  উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের ১ নং আশ্রায়ন কেন্দ্রে এ  অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ১০ টি পরিবারের সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এই আশ্রয় কেন্দ্রের একটি ঘরে বসবাস করতেন সাবানা ও তার একমাত্র ছেলে।

জানা গেছে,  তেনাপঁচা  গ্রামের হতদরিদ্র মালেক শেখের মেয়ে সাবানা। অভাবের কারনে খুব অল্প বয়সে ফারুক শেখ নামে এক যুবকের সাথে তাকে বিয়ে দেয় বাবা-মা। বিয়ের মাত্র ৬ মাস পর তারা বাবার মৃত্যু হয়। কযেক বছর পর তার মায়েরও মৃত্যু হয়। হতভাগ্য সাবানার দুঃখের এখানেই শেষ না। বিয়ের মাত্র দেড় বছরের মাথায় স্বামী তাকে ফেলে রেখে চলে যায়। অন্য জায়গায় বিয়ে করে সংসার গড়ে তোলে। তখন তার কোলে মাত্র ৬ মাস বয়সী শিশু সন্তান।

সরেজমিন আলাপকালে সাবানা বিলাপ করতে করতে বলেন, মায়ের পেট থেকে পড়ার পর থেকেই কষ্ট করছি। বিয়ের পর ছেলের জন্ম হওয়ায় খুব খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু স্বামী ফেলে চলে যাওয়াতে শিশু সন্তানকে নিয়ে চোখে অন্ধকার দেখতে থাকি। কিন্তু ভেঙে পড়িনি। তিনি বলেন, গ্রামের লোকজনের সহায়তায় এই আশ্রয় কেন্দ্রে বসবাসের জন্য একটি ঘর পাই। বেঁচে থাকার জন্য লোকজনের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ  করতে থাকি। পাশাপাশি জমিতে পুরুষ শ্রমিকদের সাথে কৃষি শ্রমিকের কাজও করি।বাড়িতে কিছু হাঁস-মুরগি পালতে শুরু করি। কোনদিন একটু ভালো খাবার কিনে খাইনি।একটা নতুন জামা-কাপর-স্যান্ডেল কিনে পড়িনি।  প্রতিবেশীদের দেয়া কাপড় চোপর পড়েই দিন কেটেছে। এভাবে খেয়ে-না খেয়ে চলতে থাকি।সেইসাথে  তিল তিল করে সঞ্চয় করতে থাকি।  এভাবে তার প্রায় ৩ লাখ টাকার মতো সঞ্চয় হয়। ঘরের হাঁড়ি-পাতিল, টিনের বাক্স ও কাঁথা -বালিশের ভাঁজে ভাঁজে সে টাকা লুকিয়ে রাখে।যাতে কেউ বুঝতে না পারে।

সাবানা বলেন, শত কষ্টের মধ্যেও ছেলেটাকে ৮ম শ্রেনী পর্যন্ত লেখাপড়া করিয়েছে। আশা করেছিলাম  তাকে বিদেশ পাঠাব। এজন্য কয়েকদিন আগে পরিচিত একজনের সাথে কথা বলি।সে জানায়, বিদেশ যেতে কমপক্ষে ৫/৬ লাখ টাকা লাগবে। ইচ্ছে ছিল আরো কিছু টাকা জমানোর পর বাকি টাকা লোন নেব। কিন্তু জমানো সব টাকা পুড়ে যাওয়ায়  আমার সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল। আশ্রয়ণের বাসিন্দা ফুলচাঁদ সরদার ও সাহেদা বেগম জানান,  আগুনে তাদের মতো মোট ১০ জন সর্বশান্ত হয়েছে। এর মধ্যে সাবানা মেয়েটার জন্য তাদেরও খুব কষ্ট হচ্ছে। ও বড় দুঃখী। অনেক কষ্ট করে সে ছেলেকে বিদেশে পাঠাবে বলে টাকা জমিযেছিল। কিন্তু তার সব টাকা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

এদিকে গত বুধবার দুপুরে কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহ সভাপতি ও রাজবাড়ী জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আসলাম মিয়া ক্ষতিগ্রস্ত আশ্রায়ন কেন্দ্রে ছুটে যান।।এ সময় তিনি ক্ষতিগ্রস্ত ১০ টি পরিবারের মাঝে ১ বস্তা করে চাউল, শুকনো খাবার, ১০ টি শাড়ি- কাপড় ও নগদ ১ হাজার টাকা করে আর্থিক সহযোগিতা দেন। সেইসাথে তিনি পরবর্তিতেও ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকার জন্য আশ্বস্ত করেন।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাহিদুর রহমান বলেন, প্রশাসনের পক্ষ হতে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর মাঝে শুকনা খাবার দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ত্রাণ সহায়তার জন্য তালিকা প্রস্তুত করে জেলা প্রশাসকের  কাছেপাঠানো হয়েছে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।