আবদুল জলিল, সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার উধুনিয়া গ্রামে গোহালা নদীর আড়াই কিলোমিটার অংশ ইজারা দিয়েছে স্থানীয় ‘উধুনিয়া বাজার জামে মসজিদ’ কমিটি। এতে জীবিকা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছে নদী নির্ভর শতাধিক জেলে পরিবার।
গত বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) মাইকিংয়ের মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করে সর্বোচ্চ দরদাতা ইউসুফ আলী মোল্লাকে ১ লাখ ৬২ হাজার টাকায় এ ইজারা দেওয়া হয়। মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইজারার আওতায় আশ্বিন থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত কেউ ইজারাদারের অনুমতি ছাড়া নির্ধারিত অংশে মাছ ধরতে পারবে না।
স্থানীয় জেলেরা বলছেন, decades ধরে গোহালা নদীতে অবাধে মাছ ধরে তারা জীবিকা চালিয়ে আসছেন। এবারই প্রথম নদী ইজারা দেওয়ায় তাদেরকে ১০-১৫ হাজার টাকা করে চাঁদা দিতে বলা হচ্ছে, যা অধিকাংশ জেলের পক্ষেই সম্ভব নয়।
৭০ বছরের প্রবীণ জেলে আব্দুল মান্নান ফকির বলেন, “৪০ বছর ধরে মাছ ধরে খাচ্ছি, কোনোদিন নদী ইজারা হতে দেখিনি। এখন টাকা না দিলে নদীতে নামতেই দেবে না।”
জেলে ইসমাইল হোসেন বলেন, “নদী তো সরকারি সম্পদ, এটা ইজারা দিলো কীভাবে? মাছ ধরার ওপর এত বাধা আগে কখনও আসেনি।”
এ বিষয়ে মসজিদ কমিটির সহ-সভাপতি আব্দুল হামিদ বলেন, “মসজিদের উন্নয়নের জন্য ইজারা দেওয়া হয়েছে। ইজারাদার ছাড়া নির্ধারিত নদী এলাকায় কেউ মাছ ধরতে পারবে না।”
তবে স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে কড়া অবস্থানে রয়েছে।
উল্লাপাড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আতাউর রহমান বলেন, “নদীতে মাছ ধরার অধিকার মসজিদ কমিটি দিতে পারে না। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত বলেন, “নদী সরকারি সম্পদ। কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এটি ইজারা দিতে পারে না। কেউ এ ধরনের কার্যক্রমে জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, “নদী ইজারার কোনো নিয়ম নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
এ অবস্থায় গোহালা নদীর জেলেরা তাদের জীবিকার স্বাভাবিক অধিকার ফিরে পেতে দ্রুত প্রশাসনের কার্যকর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.