কালাই, জয়পুরহাট প্রতিনিধি
আধুনিকতা ও পরিবর্তিত জীবনযাত্রার প্রভাবে সারা বাংলাদেশে যেমন ঘটে যাচ্ছে, তেমনি জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার আশপাশেও ধানের গোলা ঘরগুলো বিলুপ্তির পথে। এক সময় কৃষকদের বাড়ির উঠানে বাঁশ, মাটি ও টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি এসব ধানের গোলা ঘর এখন আধুনিক সংরক্ষণ পদ্ধতি এবং পেশার পরিবর্তনের কারণে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে।
সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ আক্তারুজ্জামান বলেন, "গোলায় অল্প জায়গায় অনেক ধান রাখা যেত। এতে ধান শুকিয়ে রেখে অনেক দিন ভালোভাবে সংরক্ষণ করা সম্ভব ছিল। তবে সেই ঐতিহ্য হারিয়েও কেউ আফসোস করেন না। বরং ছেলে-বউ বা মেয়ে-জামাই চাকরি করে থাকলে কৃষক পরিবারের প্রতি বেশি সম্মান অনুভব করেন।"
স্থানীয় প্রবীণ কৃষক তোফাজ্জল হোসেন মন্ডল জানান, "আমি দেখেছি, বাপ-দাদাদের কাছ থেকেও শুনেছি, বর্ষার সময়ে কৃষকরা ধান মাড়াই করে গোলায় কিংবা বড় আকারের মাটির তৈরি পাত্রে ধান রাখতেন। শুকনো মৌসুমে তা বের করে শুকিয়ে বাজারজাত ও নিজেদের জন্য সংরক্ষণ করা হতো। এখন আর এই ধরণের দৃশ্য খুব কম দেখা যায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এসব হারিয়ে যাচ্ছে।"
কালাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনুর রশীদ বলেন, "সময়ের কাছে ঐতিহ্য হারিয়ে কৃষকের গোলার স্থান দখল নিয়েছে আধুনিক গুদাম ঘর। তারপরও ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের উৎপাদিত ফসল সংরক্ষণের জন্য বাঁশের তৈরি ডোল বা ঘের কিছু পরিমাণে চোখে পড়ে। বর্তমান প্রজন্ম হয়তো জানবেই না, একসময় ধান সংরক্ষণের জন্য 'ধানের গোলা' নামে একটি প্রচলিত ব্যবস্থা ছিল।"
গ্রামীণ কৃষকদের জন্য একটি সময়ের সেবিকা হয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী ধানের গোলা ঘর আজ বিলুপ্তির প্রান্তে। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়া এই ঐতিহ্য রক্ষায় এখন সচেতনতার প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.