জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলায় মৌসুমি সবজির আমদানি হঠাৎ করে কমে যাওয়ায় কাঁচাবাজারে আগুন লেগেছে। কাঁচা মরিচের ঝাঁজে দগ্ধ ক্রেতারা এখন অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামে নতুন করে অস্বস্তিতে পড়েছেন। সবজির পাশাপাশি মাছের বাজারেও বেড়েছে অস্থিরতা।
উপজেলার বড় কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সব ধরনের সবজির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় ২০-৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে কাঁচা মরিচের—যা প্রতি কেজি এখন ২০০ থেকে ২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। একই সঙ্গে শিম ১৩০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, পটল ও বরবটি ৬০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, শসা ৭০ টাকা, কচু ৪০ টাকা, কাঁচা কলা ৩০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, লাউ ৫০ টাকা, পেঁয়াজ ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
শুধু সবজিই নয়, মাছের বাজারেও নেই স্বস্তি। রুই মাছ প্রতি কেজি ২৪০-২৫০ টাকা, পাবদা ৪৫০, ছোট চিংড়ি ৮০০, কই মাছ ২২০, টেংরা ৪৫০ এবং গুড়া মাছ ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মা ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা চলায় বড় ইলিশ অনুপস্থিত, বাজারে রয়েছে ছোট ইলিশ যার কেজি শুরু ২২০ টাকা থেকে।
বাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতা সিরাজ মৃধা জানান, “টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে উপজেলার বহু সবজির ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। আগে যারা ভ্যান ভরে মাল আনত, এখন তারা সাইকেলের সাথে ব্যাগ ঝুলিয়ে বাজারে আসে। উৎপাদন কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে।”
অটোচালক মো. লিটন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “প্রতিদিনই দাম বাড়ছে। এখন বাজারে ঢুকলেই মনে হয় শ্বাস বন্ধ হয়ে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে তো আমরা খেতেই পারব না।”
সবজি বিক্রেতা মো. জাহাঙ্গীর বলেন, “আমরাও তো কম দামে পাই না, বেশি দামে কিনে কম দামে বিক্রি করা সম্ভব না। যে দামেই কিনি, কিছু না কিছু লাভ তো রাখতেই হয়।”
গোপীনাথপুরের বিক্রেতা আব্দুল আলিম বলেন, “চারপাশ ডুবে গেছে পানিতে। কৃষকরাও যে যা পাচ্ছে, বেশি দামে তুলছে। ফলে আমাদেরও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।”
বাজারে প্রতিদিনকার দামের এই উর্ধ্বগতি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। নিম্নবিত্তের পক্ষে তিন বেলার খাবার নিশ্চিত করাই এখন কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। মধ্যবিত্তরা সংকোচে পড়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। যদিও উচ্চবিত্ত শ্রেণির জীবনযাত্রায় এই পরিবর্তনের তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ও বাজার নজরদারির অভাবে প্রতি মৌসুমেই এমন সংকট তৈরি হচ্ছে। সময়মতো কৃষকদের সহায়তা ও বাজার ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা না আনলে এই পরিস্থিতি আরও নাজুক হতে পারে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.