কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন সময়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বরখাস্তের দাবিতে কটিয়াদীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার সকাল ১১টায় ইসলামী ব্যাংক কটিয়াদী শাখার সামনে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে ইসলামী ব্যাংক গ্রাহক ফোরাম এবং বৈষম্যবিরোধী চাকরি প্রত্যাশী পরিষদ। ঘন্টাব্যাপী এই কর্মসূচিতে ব্যাংকের গ্রাহক, স্থানীয় চাকরি প্রত্যাশী ও সাধারণ নাগরিকেরা অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর ২০১৭ থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত ৭,২২৪ জনকে অবৈধভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়, যার মধ্যে ৪,৫০০ জনেরও বেশি পটিয়া উপজেলার বাসিন্দা। দেশের অন্য ৬৩ জেলার প্রার্থীদের বঞ্চিত করে একটি জেলার লোকদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা।
বক্তারা আরও বলেন, “এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংক দখলের পর শুধু অবৈধ নিয়োগই নয়, ব্যাংকের অর্থ লোপাট করে বিদেশে পাচার করেছে। যার ফলে দেশের অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমন অনিয়মের মাধ্যমে দেশের ব্যাংক খাতকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।”
এ সময় বক্তারা অবৈধ নিয়োগ বাতিল করে মেধানির্ভর ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগের দাবি জানান।
ইসলামী ব্যাংকের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “এস আলম গ্রুপের দখলদারিত্বে ২০১৭ সাল থেকে যে বিপুলসংখ্যক কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, তাদের অনেকেই ভুয়া তথ্য ও জাল সনদের মাধ্যমে চাকরি পেয়েছেন। নতুন পর্ষদ গঠন হওয়ার পর দক্ষতা যাচাই পরীক্ষার আয়োজন করা হয়, যাতে প্রায় ৫ হাজার কর্মকর্তা অংশগ্রহণের কথা থাকলেও বেশিরভাগই পরীক্ষা বর্জন করেন।”
তারা আরও জানান, “বর্তমান পর্ষদ ব্যাংকখাত সংস্কারের অংশ হিসেবে স্বচ্ছ ও যোগ্যতা অনুযায়ী নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করেছে। কিন্তু যাদের নিয়োগ অবৈধভাবে হয়েছিল, তারা অপপ্রচার ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মাধ্যমে এই সংস্কার কার্যক্রমে বাধা দিচ্ছেন।”
ব্যাংকের গ্রাহক জামাল উদ্দিন মাস্টার বলেন, “এস আলমের সময়ে ইসলামী ব্যাংকে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। এখন যারা পরীক্ষায় অংশ নেয়নি বা পাস করতে পারেনি, তাদের চাকরিতে রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই। ব্যাংকের স্বার্থে তাদের বহিষ্কার করতে হবে।”
এছাড়া মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ব্যবসায়ী বাবুল মিয়া, আলী কাওসার রনি, সিয়াম হোসেন প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদ নিয়ন্ত্রণে নেয়। এরপর থেকেই ব্যাংকটির বিপুল পরিমাণ অর্থ নামে-বেনামে ঋণ দিয়ে তুলে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। পাশাপাশি শুরু হয় ব্যাপক অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিয়োগ বাণিজ্য।
চলতি বছরের ৫ আগস্ট দেশে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকখাতে সংস্কার উদ্যোগ নেয় এবং ইসলামী ব্যাংকের পুরনো পর্ষদ বাতিল করে নতুন পর্ষদ গঠন করে। এর পর থেকেই ব্যাংকে অবৈধ নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের তালিকা তৈরি ও যাচাই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.