বাকেরগঞ্জ (বরিশাল)প্রতিনিধি
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ নিয়ে স্থানীয় জেলে ও মৎস্য চাষিদের মধ্যে চরম উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। স্থানীয় জেলে ও মৎস্য খামারিদের অভিযোগ বর্তমান মৎস্য কর্মকর্তা সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নিজের ইচ্ছে ও খেয়াল খুশি মতো কার্যক্রম চালাচ্ছে, এবং তার দায়িত্বে অবহেলায় অবৈধ জাল ব্যবহারে মাছ শিকার এবং বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে জলজ পরিবেশ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
প্রতিনিয়ত বিভিন্ন খাল, বিল ও নদীতে মাছ শিকার ব্যবহৃত আছে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল, চায়না দুয়ারী জাল, চর গড়া জাল,বেন্দি জাল ও ঘূর্ণিজাল। বিশেষ করে, মাছের প্রজনন মৌসুমে এসব অনিয়ম বন্ধ না হওয়ায় দেশীয় মাছের প্রজাতি হুমকির মুখে পড়েছে।
এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে যে, উপজেলার মৎস্য বিভাগ টেন্ডারবিহীনভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে এবং খোলা জলাশয়ে মাছের পোনা অবমুক্তির নামে একই খালের একাধিক নাম ব্যবহার করে মাছের পোনা অবমুক্ত দেখিয়ে সরকারি অর্থের অপব্যবহার করা হচ্ছে। যদিও মৎস্য কর্মকর্তা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন, তথাপি এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে অভিযোগ স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জেলে ও স্থানীয়দের।
সরকারি বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও প্রকল্পের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাব সুস্পষ্ট। ‘মৎস্য অভয়াশ্রম’ প্রকল্প কেবল দায়সারা কার্যক্রমের মধ্যে সীমাবদ্ধ — যা প্রকৃত মৎস্যজীবীদের জন্য চরম হতাশাজনক।
উপজেলার জেলে ও মৎস্য খামারিদের দাবি উপজেলা মৎস্য অফিসের সকল প্রকল্প ও অর্থ ব্যয়ের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে পূর্ণাঙ্গ অডিট ও তদন্ত কার্যক্রম গ্রহণ করা । অবৈধ জাল ও বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে মাছ ধরার বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া ।প্রকৃত মৎস্যজীবী ও ক্ষুদ্র খামারিদের অধিকার ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে স্থানীয়ভাবে একটি মৎস্যজীবী কমিটি গঠন করে মতামতের ভিত্তিতে প্রকল্প গ্রহণ নিশ্চিত করা।
পরিবেশ রক্ষা ও দেশীয় মাছের প্রজাতি সংরক্ষণে মৎস্য অভয়াশ্রম প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাস্তব উদ্যোগ গ্রহণ করা। এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এই গুরুতর বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের ও দাবি জানান তারা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন খাল, বিল ও নদীতে অবৈধ জাল বসিয়ে মাছ শিকার এখন যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। প্রশাসনের নিয়মিত অভিযান না থাকায় এসব অবৈধ কর্মকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে। মৎস্য বিভাগের অবহেলা ও অনিয়মের কারণে মাছের প্রজনন ব্যাহত হচ্ছে, পাশাপাশি জলজ প্রাণীর বাস্তুসংস্থান মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,একই খালের একাধিক নাম ব্যবহার করার কোনো সুযোগ নেই। এছাড়া উপজেলা পর্যায়ে তিন লক্ষ টাকার মধ্যে যে প্রকল্পগুলো থাকে, তা সরাসরি বরাদ্দ হিসেবে বাস্তবায়ন হয়। আমাদের অফিস থেকে কোনো সরকারি প্রকল্পে টেন্ডার প্রক্রিয়া করা হয় না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুমানা আফরোজ বলেন,দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির অন্যতম কারণ হলো অবৈধ জাল ও বিষ প্রয়োগে মাছ ধরা। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কান্তি ঘোষ বলেন,তিন লক্ষ টাকার নিচে থাকা প্রকল্পগুলো উপজেলা পর্যায়ে বাস্তবায়িত হয়। তবে এর বেশি মূল্যের প্রকল্পগুলো স্থানীয় টেন্ডারের মাধ্যমে সম্পন্ন করার বিধান রয়েছে।”
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.