মোঃ ইব্রাহীম মিঞা, দিনাজপুর প্রতিনিধি
দিনাজপুরের বিরামপুর পৌরসভার পাঁচজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে সরকারি চাকরি বহাল রেখেই সাংবাদিকতা করার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে তারা লিখিতভাবে অঙ্গীকারনামা দিলেও, দীর্ঘ কয়েক মাস পার হয়ে গেলেও বিরামপুর প্রেসক্লাব (কলাবাগান ) এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেয়নি। লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, তারা দায়িত্বকালীন সময়ে পৌরসভার কাজে অনুপস্থিত থেকে সাংবাদিকতার প্রভাব খাটাচ্ছেন এবং এর মাধ্যমে জনসাধারণকে হয়রানি করছেন।
অভিযোগকারী বিরামপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মোঃ আকরাম হোসেন লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, একদিকে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারী, অন্যদিকে সাংবাদিকতা এই দ্বৈত ভূমিকা গ্রহণ করে তারা বীরদর্পে প্রভাব খাটাচ্ছেন। এর ফলে পৌরসভার স্বাভাবিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে এবং সাংবাদিকতার মতো মহান পেশাও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
১৯৯২ সালের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রণীত বাংলাদেশ গেজেটের সপ্তম অধ্যায়ের “সাধারণ আচরণ ও শৃঙ্খলা বিধি”র ৩৯(২)(খ), (চ), (ছ) ও ৭নং উপধারায় স্পষ্টভাবে বলা আছে—কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া দায়িত্বে অনুপস্থিত থাকতে পারবেন না। বাহিরের কোনো বৈতনিক বা অবৈতনিক চাকরি গ্রহণ করা যাবে না। পৌরসভার বিষয়ে অনুমতি ছাড়া সংবাদপত্র বা গণমাধ্যমের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা যাবে না।
অভিযোগ অনুযায়ী, এসব বিধান লঙ্ঘন করে সাংবাদিকতা করছেন বিরামপুর পৌরসভার পাঁচ কর্মচারী:
১. মোঃ রায়হান কবীর চপল (সহকারী হিসাব রক্ষক) — দৈনিক বর্তমান দিন / দৈনিক খোলা কাগজ
২.এসএম মাসুদ রানা (সড়ক বাতি পরিদর্শক) — দৈনিক স্বাধীন বাংলা
৩. মোঃ আব্দুর রউফ সোহেল (এমএলএম-পিয়ন) — দৈনিক সময়ের কাগজ
৪. মোঃ তরিকুল ইসলাম (কর আদায়কারী) — দৈনিক ঢাকা
৫.মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান (হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা, প্রথম শ্রেণি) — দৈনিক করতোয়া
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুজহাত তাসনীম আওন বলেন, পৌরসভায় চাকরিরত অবস্থায় তারা সাংবাদিকতা করতে পারবে না। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে তারা লিখিতভাবে অঙ্গীকারনামা দিয়েছে।
অভিযোগটি কয়েক মাস আগে দাখিল হলেও এখন পর্যন্ত বিরামপুর প্রেসক্লাব এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। বর্তমানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর দায়িত্বপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন শাহ আলম মণ্ডল। তিনি বলেন, অভিযোগটি আমাদের জানা আছে। বিরামপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সভায় আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি দেখা হবে।
তবে স্থানীয় সাংবাদিক সমাজের একটি অংশ প্রশ্ন তুলেছে কয়েক মাস পেরিয়ে গেলেও প্রেসক্লাবের কোনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত না নেওয়া সংগঠনের নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
সচেতন নাগরিকরা বলেন, সরকারি চাকরির পাশাপাশি সাংবাদিকতার পেশায় যুক্ত থেকে সংগঠনের পদে থেকে প্রভাব বিস্তার ও জনহয়রানি বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। তাদের ভাষায়,প্রেসক্লাব ও প্রশাসন যদি একযোগে ব্যবস্থা না নেয়, তবে পৌরসভার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা হারাবে এবং সাংবাদিকতার পেশা আরও অবিশ্বাসের মুখে পড়বে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.