আবিদ হাসান, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
বর্তমান সময়ে গত ৪ অক্টোবর হতে ২৫ অক্টোবর ২০২৫ ইং পর্যন্ত সরকার ঘোষিত ২২ দিন ইলিশ আহরণ,ক্রয়-বিক্রয়,পরিবহণ নিষিদ্ধ হওয়ায় জেলেদের এই ২২দিন কর্মহীন থাকার কথা চিন্তা করে সরকার প্রতিবছর বিনামূল্যে চাল বিতরণ করে থাকে।
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলায় প্রকৃত জেলেদের চাল না দিয়ে রিক্সা,ভ্যান,অটোচালকদের চাল বিতরণ করার অভিযোগ করেছেন প্রায় শতাধিক জেলে।
হরিরামপুর উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়নে চাল বিতরণের এমন অনিয়মের সাথে স্ব-স্ব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান,মেম্বর, রাজনৈতিক ব্যক্তির জোর, স্বজনপ্রীতি আর বিশেষ সুপারিশের কারসাজি রয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন অনেকেই।
এছারাও জেলে না হয়েও জেলে কার্ড পেয়ে অনেকেই চাল আত্নস্বাত করেছে বলে জানা গেছে। আর মৃত ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে চাল বিতরণের করা হয়েছে বলেও অনেকেই জানিয়েছেন। দায়িত্বশীল উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা,কর্মচারীরা কতটা উদাসীন আর দায়িত্ববান, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে অনেকেই। বিগত সরকারের আমলে বিশেষ সুপারিশ, মাসোয়ারা আর মামু খালুর জোরে জেলে না হয়েও নামমাত্র জেলে বানিয়ে অনেকেই জেলে কার্ডের চাল লুট করেছে বলে অনেকেই জানিয়েছে।
প্রকৃত জেলেরা সরকারের সহযোগিতা না পেয়ে সংসার চালানো দায় মনে করে বাধ্য হয়ে জেল,জরিমানা মাথায় নিয়ে নিষিদ্ধ সময়ে পদ্মানদীতে ইলিশ আহরণ করতে বাধ্য হচ্ছে। ফলে প্রায় প্রতিদিন উপজেলা মৎস্য অফিসের নিয়মিত অভিযানে অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ, জেল,জরিমানার শিকার হচ্ছে। আর, জেলে না হয়েও জেলে কার্ডধারীরা অদৃশ্য কারণে চাল তো নিচ্ছেই, সেইসাথে ভুয়া জেলেদের নাম কতৃপক্ষের গাফলতির জন্য নাম বাদ যাচ্ছেনা কেন, তা অনেকের মনে প্রশ্ন রয়ে গেছে।
উপজেলার বয়ড়া ইউনিয়নের দড়িকান্দি গ্রামের বাসিন্দা জেলে সফিকুল,শংকর,আফছার জানান, দড়িকান্দি গ্রামের মাটিকাটা শ্রমিক মাজেদ, রিক্সা চালক সামছু, খালপাড় বয়ড়ার খামারি বাচ্চুসহ অনেকেই জেলে না হয়েও প্রায় নিয়মিত জেলে কার্ডের চাল পায়। আমরা প্রকৃত জেলেরা চেয়ারম্যান,মেম্বরদের হঠকারিতা আর স্বজনপ্রীতি দেখে কিছুই বলতে পারিনা।
যাত্রাপুর গ্রামের জেলে জাহাঙ্গীর আলম জানান, চেয়ারম্যান বাড়ির কামলারা জেলে না হয়েও জেলে কার্ডের চাল পায়। যাত্রাপুর গ্রামের কৃষক আজমত, কাঠমিস্ত্রি সাঈদ, কৃষক আবজালসহ অনেকেই জেলে কার্ডের চাল পায়? আমরা জেলেরা চেয়ে চেয়ে দেখি আর আফসোস করি।
উপজেলার ভেলাবাদ গ্রামের শরিফুল ইসলাম জানান, সুতালড়ি ইউনিয়নে কয়েকজন মৃত জেলের চাল আত্নস্বাত করা হয়েছে। আমি নিজেই প্রতিবাদ করেছি।
হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদা আক্তার মুঠোফোনে বলেন, আমি গতকাল যোগদান করেছি। জেলেদের ভিজিএফের চাল বিতরণের তালিকা আগেই করা হয়েছে। আপনি যে বিষয়টা বললেন, সেটার খোজ নিচ্ছি।
উপজেলা মৎস্য অফিসের তথ্য অনুযায়ী- গত কয়েকদিনে ২৫টির বেশি অভিযান পরিচালনা করে ১ লক্ষ ৫৪ হাজার লক্ষ মিটারেরর বেশি অবৈধ কারেন্ট চাল ধ্বংস করা হয়েছে। যাহার আনুমানিক বাজার মুল্য প্রায় সাড়ে ষোল লক্ষ টাকার বেশি। ৯টির বেশি মোবাইল কোর্ট, ১৭ টির বেশি নিয়মিত মামলা, ৫২ হাজার টাকার বেশি জরিমানা, ৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা আর ৬০মণ ছোট,মাঝারি,বড় সাইজের ইলিশ জব্দ করে উপজেলার বিভিন্ন এতিমখানায় দেয়া হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.