দুর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধি
রাজশাহীর দুর্গাপুরে বিএনপির একটি ওয়ার্ড কার্যালয়ে রাতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার (২০ অক্টোবর) গভীর রাতে উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর পালশা ওয়ার্ড বিএনপির কার্যালয়ে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলাকারীরা অফিসের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করার পাশাপাশি দলীয় প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং প্রয়াত এমপি অ্যাডভোকেট নাদিম মোস্তফার ছবি ছিঁড়ে ফেলে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই ওয়ার্ডে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল চলে আসছিল। সম্প্রতি নেতৃত্ব ও কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা আরও তীব্র হয়। সোমবার বিকেলে বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় আয়োজিত এক দোয়া মাহফিলে কেন্দ্রীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ব্যারিস্টার রেজাউল করিম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
এই অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগপন্থী হিসেবে পরিচিত ব্যারিস্টার রেজাউলের পিতা আজগর আলী মাস্টারের উপস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিএনপির আরেকটি অংশ। তারা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ একজন ব্যক্তির উপস্থিতি বিএনপির অনুষ্ঠানে অনভিপ্রেত। এর পরপরই গভীর রাতে কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়।
পালশা শহীদ জিয়া স্মৃতি পরিষদের সভাপতি লিলতাব হোসেন লিটন অভিযোগ করেন, “প্রতিপক্ষ গ্রুপ ব্যারিস্টার রেজাউল করিমের অনুসারী আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে আমাদের কার্যক্রম ব্যাহত করতে এই হামলা চালানো হয়েছে। দলের শীর্ষ নেতাদের ছবি ছিঁড়ে ফেলা দলের প্রতি চরম অবমাননা।”
অন্যদিকে, অভিযুক্ত আব্দুল মান্নান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমরা শুধু অনুষ্ঠান আয়োজন করেছি। অনুষ্ঠান শেষে সবাই নিজ নিজ বাড়ি ফিরে যায়। পরে স্থানীয়রা ফোনে জানায় ক্লাবে হামলা হয়েছে। আমার ধারণা, নিজেদের মধ্যে বিরোধ ঢাকতে প্রতিপক্ষ নিজেরাই পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।”
এ বিষয়ে দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুজ্জামান আয়নাল বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা তদন্ত করে সাংগঠনিকভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”
দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতিকুল ইসলাম বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”