শারমিন সুলতানা, নরসিংদী প্রতিনিধি
নরসিংদীর পলাশ থানা বিএনপির সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. এরফান আলীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ বুধবার (২২ অক্টোবর)। এ উপলক্ষে দলীয়ভাবে কোনো কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়নি। তবে পারিবারিকভাবে আগামী শুক্রবার তাঁর নিজ বাড়ি ও স্থানীয় মসজিদে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হবে বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
মো. এরফান আলী ২০২৪ সালের ২২ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ছিলেন একজন সংগ্রামী রাজনীতিবিদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা।
তিনি ১৯৬৭ সালে ঘোড়াশাল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, এরপর নরসিংদী কলেজ (বর্তমানে নরসিংদী সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ) থেকে এইচএসসি ও স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিষয়ে এম.এ অধ্যয়ন করেন।
ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির মাধ্যমে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের সূচনা হয় এবং তিনি তৎকালীন কালীগঞ্জ থানার ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ‘জাগো দল’-এর যুব অঙ্গসংগঠন জাগো যুবদলের পলাশ থানা আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে ১৯৭৮ সালে বিএনপি গঠনের পর তিনি পলাশ থানা যুবদলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নির্বাচিত হন।
তিনি সামরিক সরকারের সময় বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় কারাবরণ করেন। ১৯৮৩ সালে গ্রেপ্তার হয়ে টানা চার বছর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন। মুক্তির পর ঘোড়াশালে এক বিশাল সংবর্ধনায় তিনি পুনরায় রাজনীতিতে সক্রিয় হন এবং সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন।
১৯৯০ সালের গণ-অভ্যুত্থানের সময় আবারও কারারুদ্ধ হন এবং চার মাস ডিটেনশনে ছিলেন। স্বৈরশাসক এরশাদের পতনের দিন, ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ সালে, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বার্তার মাধ্যমে নরসিংদী জেলা বিএনপির তৎকালীন সভাপতি প্রয়াত শামসুদ্দিন আহমেদ এছাকের সহযোগিতায় তিনি কারামুক্ত হন।
তিনি দীর্ঘ ৯ বছর পলাশ থানা যুবদলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৭ সালে তিনি থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং টানা ২৫ বছর সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১২ সালে তিনি পলাশ থানা বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হন এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই পদে দায়িত্বে ছিলেন।