পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি

গাজীপুরের টঙ্গী পূর্ব থানা এলাকার টিএনটি বাজার জামে মসজিদের খতিব মুফতি মহিবুল্লাহ মিয়াজীকে নিখোঁজ হওয়ার একদিন পর পঞ্চগড় থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে পঞ্চগড় সদর উপজেলার হ্যালিপ্যাড এলাকায় সড়কের পাশে একটি গাছে শিকল দিয়ে পা বাঁধা ও বিবস্ত্র অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে পড়ে থাকতে দেখে। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।

বর্তমানে মুফতি মহিবুল্লাহর শারীরিক অবস্থা উন্নতির পথে থাকলেও তিনি বিছানা থেকে উঠতে পারছেন না। কথা বলতে পারছেন।

হাসপাতালের বিছানায় তিনি জানান, বুধবার ফজরের নামাজের পর হাঁটতে বের হলে পাঁচজন তাকে একটি এম্বুলেন্সে তুলে নিয়ে যায়। এরপর তারা তার মুখে কাপড় চেপে ধরেছিল এবং অমানবিক নির্যাতন চালায়। তাদের কোনো পক্ষ মুসলমান বা হিন্দু মনে হয়নি, বাংলাদেশিও মনে হয়নি। তারা শুদ্ধ বাংলা ভাষায় গালাগালি করেছিল।

মুফতি মহিবুল্লাহ আরও জানান, তাদের উদ্দেশ্য ছিল ইসকনের চিন্ময় চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর জামিন বিষয়ে কথা বলানো। কয়েক মাস ধরে তাকে চিঠির মাধ্যমে ইসকনের বিরুদ্ধে কথা বলতে নিষেধ করা হচ্ছিল এবং ইসকনের পক্ষে কথা বললে এক কোটি টাকা দেওয়া হবে বলেও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।

সর্বশেষ ২১ অক্টোবরের একটি চিঠিতে তাকে এনসিপি, বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলতে নিষেধ করা হয়। চিঠিতে বাংলাদেশকে ‘পূর্ব বঙ্গ’ বলা ও অখণ্ড ভারতের পক্ষে কথা বলার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। তিনি ন্যায়বিচার ও নিরাপত্তা দাবি করেছেন।

পঞ্চগড়সহ আশপাশের এলাকা থেকে আলেম-ওলামারা তাকে দেখতে হাসপাতালে ভিড় করছেন। ঘটনার প্রতিবাদে পঞ্চগড় শহরে বিভিন্ন ইসলামি সংগঠন বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।

পঞ্চগড় সিভিল সার্জন ডা. মিজানুর রহমান বলেন, মুফতি মহিবুল্লাহর শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তার আগে একটি জটিল অপারেশন করা হয়েছে। তিনি ডায়াবেটিসের রোগী। যথাযথ চিকিৎসা চলছে।

পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সি বলেন, “খবর পেয়ে ভোরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরিবারের সদস্য এবং টঙ্গী থানাকে জানানো হয়েছে। তারা আসলে আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে হস্তান্তর করা হবে। কে বা কারা অপহরণ করেছে, তদন্ত চলছে।”