বাবুগঞ্জ (বরিশাল) প্রতিনিধি
বরিশালের বাবুগঞ্জে চুরির অভিযোগে এক যুবককে প্রকাশ্যে ধাওয়া করে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ায় এলাকাজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় মারধরের শিকার যুবক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ভূতরদিয়া বিলের খাল এলাকায়। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ অক্টোবর রাতে স্থানীয় আব্দুল আলী বেপারীর বাড়িতে সিঁধ কেটে প্রবেশ করে তার পুত্রবধূ লিপি বেগমের কানের দুল ছিঁড়ে নেওয়ার একটি চুরির ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ ওঠে।
এর পরদিন (রবিবার) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে একই এলাকার মৃত মোসলেম সরদারের ছেলে বেলাল সরদার (৩৬) সোনার বাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশে তার বন্ধু জসিমের সঙ্গে কথা বলছিলেন। ওই সময় আব্দুল আলী বেপারীর ছেলে সজল বেপারী তার সহযোগীদের নিয়ে চুরির অভিযোগ এনে বেলালকে ধাওয়া করেন। আত্মরক্ষার্থে বেলাল পালিয়ে মন্টু হাওলাদারের বাড়ির পেছনের ধানক্ষেতে পড়ে গেলে সজল, তার ভাই আল-আমিনসহ আরও কয়েকজন মিলে তাকে ধরে ধানক্ষেতের মধ্যেই বেধড়ক মারধর করেন।
স্থানীয় এক যুবক মোবাইলে পুরো ঘটনাটি ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে তা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
ভুক্তভোগী বেলাল সরদার বলেন, আমি কোনো চুরির সঙ্গে জড়িত নই। বিনা কারণে আমাকে ধরে প্রকাশ্যে অপমান ও নির্যাতন করা হয়েছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
কেদারপুর এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা আজিজ সরদার বলেন, কাউকে সন্দেহ করে এভাবে মারধর করা সম্পূর্ণ অন্যায় ও আইনবিরোধী কাজ। উপরন্তু ভিডিও ধারণ করে ছড়িয়ে দেওয়া একটি নেক্কারজনক ঘটনা। প্রশাসনের উচিত এর কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।
অন্যদিকে, চুরির ঘটনার অভিযোগে লিপি আক্তারের ননদ কাজল আক্তার দাবি করেন, আমাদের ঘরে সত্যিই চুরি হয়েছে। স্থানীয়ভাবে সন্দেহ ছিল বেলালের ওপর।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সজলের দাবি, তিনি মারধর করেছেন তবে ভিডিও ধারণ কে করেছেন সেই বিষয়টি তিনি জানেন না।
এ বিষয়ে বাবুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জহিরুল আলম বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। চুরির অভিযোগ দিয়ে কাউকে প্রকাশ্যে মারধর ও ভিডিও ভাইরাল করা আইনত অপরাধ। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় সচেতন মহল জানিয়েছে, নিজ হাতে আইন তুলে নেওয়া কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। প্রশাসনের উচিত দ্রুত অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনা।

