সামসুল হক জুয়েল, কালীগঞ্জ (গাজীপুর)প্রতিনিধি
গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার ২৫নং মূলগাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ভর্তি ফরম, পরীক্ষা ফি, রেজিষ্ট্রেশন ফি ও ছাড়পত্রের সরকার নির্ধারিত অর্থ আদায়ের বিপরীতে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্ণীতির অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০১৩ সাল থেকে কিছু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদানের অনুমতি দেয়। এরই প্রেক্ষিতে ২০১৫ সালে কালীগঞ্জ উপজেলার ২৫নং মূলগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, টিওরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মোহানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পানজোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই স্তরে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু ২৫নং মূলগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুর আক্তার বেগম সরকারি নির্দেশনা ছাড়াই ষষ্ঠ-অষ্টম শ্রেণীতে শিক্ষার্থী ভর্তি ফরম ১০০ টাকা, প্রতিটি প্রান্তিক পরীক্ষা ফি ৩০০ টাকা, রেজিষ্ট্রেশন ফি ৫০০ টাকা এবং ছাড়পত্র (টিসি) বাবদ ২০০ টাকা করে আদায় করা করছেন।
এই উত্তোলিত অর্থ দ্বারা বিদ্যালয়ের ন্যূনতম ব্যয় নির্বাহ করে বাকী টাকা এবং সরকারি বরাদ্দকৃত ফান্ডের সমস্ত টাকা প্রধান শিক্ষক আত্মসাৎ করছেন। সম্প্রতি রেজিষ্ট্রেশন চলাকালীন সরকারি ফি ১৮৩ টাকার পরিবর্তে ৫০০ টাকা করে আদায় করায় অভিভাবকদের অসন্তোষের মুখে বিদ্যালয়ের এমন চাঞ্চল্যকর অনিয়ম ও দূর্নীতির তথ্য বেরিয়ে আসে।
ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত মোট ৩৫০ জন শিক্ষার্থীর প্রত্যেকের নিকট হতে রেজিষ্ট্রেশন বাবদই অতিরিক্ত ৩১৭ টাকা করে প্রায় এক লাখ দশ হাজার টাকা আদায় করেছেন। কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাব এবং নিজস্ব প্রভাব খাটিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূর আক্তার বেগম দীর্ঘ দিন যাবত অতিরিক্ত ফি আদায় বাবদ লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিভাবক ও এলাকাবাসীর অভিযোগ রয়েছে।
এবিষয়ে ২৫নং মূলগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুর আক্তার বেগম স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, ভর্তি ফরম বাবদ ১০০ টাকা, রেজিষ্ট্রেশন ফি ৫০০ টাকা, পরীক্ষার ফি ৩০০ টাকা ও ছাড়পত্র নেওয়ার সময় ২০০ টাকা করে নিয়েছি। ‘সরকার নির্ধারিত ফি’র পরিবর্তে কেন অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেছেন’ প্রশ্ন করলে প্রধান শিক্ষক নূর আক্তার বেগম কোন জবাব দিতে পারেননি।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুরন্নাহার বলেন, ২৫নং মূলগাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কর্তৃক বিভিন্ন ফি বাবদ সরকারি নির্ধারিত অর্থের অতিরিক্ত অর্থ আদায় করার বিষয়টি জানতে পেরে এটিও মনিরা বেগমকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। উক্ত কমিটিকে আগামী ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে দোষী প্রমাণীত হলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

