মোঃ মোকাররম হোসাইন,জয়পুরহাট প্রতিনিধি
জয়পুরহাটের কালাইয়ে আলুর দাম কমে যাওয়ায় কৃষকরা ব্যাপক লোকসানের শিকার হচ্ছেন। সেই সঙ্গে আলুর বাজার পড়ে যাওয়ায় চলতি মৌসুমে বীজ বিক্রিতে ধস নেমেছে। বাজারে আলুর যথাযথ মূল্য না থাকায় কৃষকরা এবার কোম্পানীর মানসম্মত বীজ না কিনে হিমাগারে নিজেদের সংরক্ষিত আলুই বীজ রোপণ করার সিন্ধান্ত নিয়েছেন কৃষকরা । ফলে চলতি মৌসুমে বীজ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ও ডিলারদের বিক্রি না থাকায় প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, গত বছরের উৎপাদিত আলু হিমাগারে সংরক্ষণের পর এখন প্রতি বস্তা আলু বিক্রি করে হাতে পেয়েছে ১২০-৩০ টাকা। এতে কেজিতে ১২-১৪ টাকা কৃষকের লোকসান হয়েছে। যা উৎপাদন খরচের চেয়েও অনেক কম দাম যা তাদের জন্য বড় ধরনের আর্থিক ধাক্কা হয়ে এসেছে। লোকসান পুষিয়ে নিতে অনেকেই হিমাগারে রাখা আলুকে বীজ হিসেবে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এতে অতিরিক্ত খরচের ঝামেলা নেই, পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতির ঝুঁকিও তুলনামূলক কম।
কৃষক আলী আনছার বলেন, “হিমাগারে আলু রেখে লাভত দূরের কথা কেজি প্রতি প্রায় ১৪ টাকা লছ করতে হয়েছে এতে আর্থিকভাবে অনেক বেকায়দায় পড়েছি। বীজ কিনে খরচ বাড়িয়ে আবার লোকসান করতে চাই না। তাই আমার মত বেশিরভাগ কৃষকই আছে যারা নিজ উৎপাদিত আলুই রোপণ করবে।”
অন্যদিকে, বীজ সরবরাহকারী কয়েকজন ডিলারদের সাথে কথা হলে তারা জানিয়েছেন, সাধারণত কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে বীজ আলুর বিক্রি থাকে সবচেয়ে বেশি। বীগত বছরগুলোতে কৃষকেরা আগে থেকেই বীজ আলুর জন্য বুকিং দিয়েছিলেন। কিন্তু এবার চাহিদা প্রায় নেই বললেই চলে। জানতে পারছি কৃষকরা তাদের উৎপাদিত আলু বীজ হিসেবে রোপন করবেন।
স্থানীয় বীজ ডিলার গোলাম মোস্তফা বলেন, “প্রতিবছর এই সময় বিক্রির ভিড় থাকে। এবার কৃষকেরা কেউ বীজ নিতে আসছেন না। কোম্পানির বীজ নিতে অনেক কৃষকদের সাথে কথা বলেছি। তাদের উৎপাদিত আলুর দাম না পাওয়ায় এবার তারা নিজস্ব আলু রোপণ করার কথা বলছেন । এতে আমাদের ব্যবসা তো প্রায় বন্ধ হওয়ার অবস্থায়।”
কালাই উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায় , উপজেলায় আবাদযোগ্য ১২ হাজার ৩৭৪ হেক্টর জমি রয়েছে। এর মধ্যে এবার ১০ হাজার ১শ' হেক্টর জমিতে আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। যা গত বছরের তুলুনায় ৮০৫ হেক্টর কম।
কালাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ বলেন, কৃষক তাদের সংরক্ষিত আলু দিয়ে রোপণ করলে ফলনে কিছু তারতম্য হতে পারে। তবে উৎপাদিত আলুর বাজারদর না থাকায় কৃষকেরা ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। বাজারে দাম না থাকলে কৃষকদের আগ্রহ ধরে রাখা কঠিন। কৃষি বিভাগ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের পাশে থেকে পরামর্শ অব্যহত রাখবে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মেহেদী হাসান
কার্যালয়ঃ দেশ ভিলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মিয়া সড়ক, জিটি স্কুল সংলগ্ন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইলঃ ০১৭১৮-৫৬৫১৫৬, ০১৯৯৫-৩৮৩২৫৫
ইমেইলঃ mehadi.news@gmail.com
Copyright © 2025 Nabadhara. All rights reserved.