জাহিদুল ইসলাম রিফাত, জবি প্রতিনিধি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ জকসু ও হল শিক্ষার্থী সংসদসমূহের গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা, ২০২৫ এর সংশোধনী চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। সেখানে নতুন করে ১৩টি পদ সংযুক্তির দাবি জানান তারা।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি তুলেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন নানা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে —সেশনজট, গবেষণা সংকট, আবাসন ও পরিবহন সমস্যা, ক্যান্টিন ও লাইব্রেরির সীমাবদ্ধতা— এসব ইস্যু দীর্ঘদিনের। আমরা চাই জকসু শুধুমাত্র রাজনৈতিক নয়, শিক্ষার্থীদের বাস্তব জীবনের সমস্যা সমাধানের প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠবে। গত ২৮ সেপ্টেম্বর ইউজিসিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল স্মারকলিপি প্রদান করে। স্মারকলিপিতে জকসুর সংবিধিতে পদ সংযোজন করার দাবি জানানো হয়েছিলো।
বাস্তবিকতায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসনের সুযোগ না থাকায় বেশিরভাগ শিক্ষার্থী বাসাবাড়িতে থাকেন, শুধু একটিমাত্র ছাত্রী হল রয়েছে, সেখানে সংকট সীমাহীন। যেহেতু আমাদের হল নেই সেখানে ছাত্র সংসদ বিদ্যমান না থাকায় আমরা জকসুতে সম্পাদকীয় পদ বৃদ্ধির কথা জানিয়েছিলাম। আঠারো হাজার শিক্ষার্থীর প্রতিনিধিত্ব ও সংকট সমাধানে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সম্পাদকীয় পদ সৃষ্টি অত্যাবশ্যকীয়।
নতুন ১০ টি পদ সংযোজনের দাবি। পদ সমূহ—
১. বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থী বিষয়ক সম্পাদক
২. ছাত্রীকল্যাণ বিয়ষক সম্পাদক (শুধু নারীদের জন্যে বরাদ্দ থাকবে)
৩. দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক (ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক সম্পাদক)
৪. ধর্ম ও সম্প্রীতি বিষয়ক সম্পাদক
৫. মিডিয়া ও যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক
৬. দফতর সম্পাদক
৭. বিতর্ক সম্পাদক
৮. স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক থেকে
(ক) স্বাস্থ্য সম্পাদক
ও (খ)পরিবেশ সম্পাদক আলাদাভাবে করতে হবে।
৯. সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক থেকে দুটি সম্পাদক পদকে আলাদা করতে হবে।
(ক) সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক
(খ) সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পাদক
১০. কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া বিষয়ক সম্পাদক
এবং বর্তমান সংবিধিতে উল্লেখিত ০৭ টি সদস্য পদের সাথে আরও নতুন ০৩ টি সদস্য পদ যুক্ত করে মোট ১০ টি সদস্য সংযুক্ত করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, আমাদের চাহিদা অনুযায়ী প্রশাসন কিছু পদ সংযুক্ত করেছে এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।আমাদের প্রত্যাশা ছিলো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি অত্যাধুনিক, যুগোপযোগী এবং বাস্তবসম্মত জকসু নীতিমালা প্রণয়ন করবেন। কিন্তু আমরা জকসু নীতিমালায় প্রশাসনের ব্যাপক তাড়াহুড়ো দেখেছি একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে। তবে সেই তাড়াহুড়ো বিশেষ বৃত্তিতে দেখিনি। যা খুবই হতাশাজনক। আমরা আশা করছি আমাদের দাবি করা পদগুলো নীতিমালাতে সংযুক্ত করবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর প্রথমবার জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে—এটি নিঃসন্দেহে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। আমরা আশা করি, এই নির্বাচন হবে অবাধ, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক। প্রশাসন সকল ছাত্র সংগঠনকে সমান সুযোগ দেবে, যাতে প্রত্যেকে গণতান্ত্রিকভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে। আমরা চাই না জকসু কোনো দলীয় প্রভাব বা পক্ষপাতদুষ্টতার শিকার হোক; বরং এটি যেন শিক্ষার্থীদের প্রকৃত প্রতিনিধি নির্বাচনের একটি মুক্ত মঞ্চ হয়।

