রাসেল আহমেদ,খুলনা প্রতিনিধি
খুলনার তেরখাদা উপজেলার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নির্মিত সব আবাসিক ভবনই এখন জরাজীর্ণ, পরিত্যক্ত ও বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। প্রায় চার দশক আগে নির্মিত এসব ভবনের দেয়ালে ফাটল, ছাদের ঢালাই ভেঙে রড বেরিয়ে পড়া, দরজা-জানালা ভাঙা—সব মিলিয়ে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৫–৮৬ সালে নির্মিত এসব ভবন দীর্ঘ এক যুগ আগে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও এখনো কয়েকজন ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেখানে বসবাস করছেন। অন্যদিকে অনেক কর্মকর্তা উপজেলা সদরের বাইরে ভাড়া বাসায় বা খুলনা শহরে পরিবার নিয়ে থাকছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ভবনগুলোর অধিকাংশে দেয়ালে বড় ফাটল, ছাদের পলেস্তার খসে পড়া এবং বৃষ্টির সময় ছাদ চুয়ে পানি পড়া নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোথাও কোথাও জমে থাকে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ, বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে দুর্গন্ধ। সামান্য ভূমিকম্প বা ঝড়ো হাওয়াতেও ভবনগুলো দুলে ওঠে বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা।
উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের নৈশপ্রহরী আবুল কাসেম বলেন, “বৃষ্টি হলে ছাদ থেকে পানি পড়ে, দেয়ালে ফাটল ধরেছে। তবুও থাকতে হয়—কারণ অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।”
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী প্রজিত সরকার বলেন,
“সব কোয়ার্টারই ঝুঁকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত সংস্কার বা নতুন ভবন নির্মাণ জরুরি।”
প্রতিদিন খুলনা থেকে তেরখাদা অফিসে যাতায়াত করা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নাজমুল হক বলেন,
“খুলনা থেকে প্রতিদিন সকালে বের হতে হয়। যানবাহন সময়মতো না পেলে অফিসে পৌঁছাতে দেরি হয়। উপজেলা সদরে বসবাসের উপযোগী কোয়ার্টার থাকলে কাজের গতি আরও বাড়ত।”
এ বিষয়ে তেরখাদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জান্নাতুল আফরোজ স্বর্ণা বলেন, “নতুন ভবন নির্মাণের প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে।”
বর্তমানে তেরখাদায় সরকারি ৩০ থেকে ৩৫টি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই আবাসন সংকটে ভুগছেন। কর্মকর্তাদের মতে, দীর্ঘদিনের অবহেলা ও সংস্কারের অভাবে এখন এসব ভবন একটি বড় দুর্ঘটনার অপেক্ষায় আছে।

